পোল্যান্ড ভিসা ফ্রম বাংলাদেশ - পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে
পোল্যান্ড হচ্ছে ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ।জার্মানি ও বেলারুশের পাশাপাশি একটি দেশ পোল্যান্ড। পোল্যান্ডে অনেকে কাজের ভিসার মাধ্যমে কাজ করতে যাই। তাছাড়া পোল্যান্ডে কাজের ভিসা ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভিসা রয়েছে যা ব্যবহার করে পোল্যান্ড যাওয়া যায়।
আজকের পোস্টে পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার উপায় বা পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে এই নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
পোল্যান্ড ভিসা পাওয়ার উপায়?
পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য অবশ্যই একটি বৈধ ভিসার প্রয়োজন হবে।ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কেউ ইচ্ছা করলে পোল্যান্ড যেতে পারবেন না। পোল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ভিসা করতে হলে প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
![]() |
পোল্যান্ড ভিসা |
পোল্যান্ড ভিসা প্রসেসিং করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে তার নিচে উল্লেখ করা হলোঃ পোল্যান্ড ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাদেরকে আবেদন ফরমটি সম্পূর্ণ ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে। ইংরেজিতে পূরণ করা হয়ে গেলে তারা আবেদনের সাথে যা যা চাইবে সবকিছু দিতে হবেঃ
- পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য এক বছর মেয়াদ সম্পূর্ণ একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে এবং ছবিটি সম্প্রতি তোলা হতে হবে।
- অন্তত ৩০০০০ ইউরোর স্বাস্থ্য বীমা থাকতে হবে।
- প্রতিটি ভিসার জন্য অবশ্যই ৭০ ইউরো পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হবে।
- পোল্যান্ডে ভ্রমণ ভিসায় যেতে হলে হোটেল বুকিং এর তথ্য দিতে হবে।
- ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে হবে।
সব কিছু যদি ঠিকঠাক ভাবে হয়ে যায় তাহলেই শুধুমাত্র আপনি আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। আবেদন পত্রটি জমা দেওয়ার পর তারা ৬০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত সময় নিয়ে থাকে।এই সময় টুকুর মধ্যেই আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন।
পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে?
পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু খরচ রয়েছে। পোল্যান্ড যাওয়ার ভিসা খরচ টা নির্ভর করবে আপনি কোন ধরনের ভিসা ব্যবহার করে পোল্যান্ড যাচ্ছেন তার উপরে। যারা স্টুডেন্ট ভিসা ব্যবহার করে পোল্যান্ডে যায় তাদের খরচ আসতে পারে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
আর যদি কাজের ভিসা ব্যবহার করে পোল্যান্ড যেতে চান তাহলে খরচ আসতে পারে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো। পোল্যান্ডে ভ্রমণ ভিসায় যেতে হলে এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি খরচ আসতে পারে। তবে কোন দালালের হাত দিয়ে ভিসা করলে আপনাদের খরচের পরিমাণটা আরো বাড়তে পারে। সব থেকে ভাল হয় কোন এজেন্সির মাধ্যমে যদি পোল্যান্ড ভিসা করা যায়।
পোল্যান্ড ভিসা এজেন্সি?
বাংলাদেশে পোল্যান্ড এম্বাসি বা কোন এজেন্সি রয়েছে কিনা এই বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। যারা এই প্রশ্ন করে থাকেন তাদের সুবিধার জন্য বলে রাখি বাংলাদেশে পোল্যান্ডের কোন অ্যাম্বাসি নেই। পোল্যান্ডের এম্বাসি রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লিতে। বাংলাদেশিরা নয়া দিল্লিতে পোল্যান্ডের এম্বাসি ব্যবহার করে ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজগুলো সম্পাদন করে থাকেন।
পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
পোল্যান্ডে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে পোল্যান্ডের কোন কাজের চাহিদা বেশি বা পোল্যান্ডে যাওয়ার আগে কোন কাজ শিখে যাবেন। পোলান্ডে ফ্যাক্টরিতে কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে তাছাড়া সেখানে ক্লিনারের কাজের জন্য ভালো লোক লাগে।
তাছাড়া পোল্যান্ডে বিল্ডিং কন্সট্রাকশন, দোকানের সেলসম্যান ও আইটি কাজের ওপর দক্ষ ব্যাক্তিদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।তাই পোল্যান্ডে যাওয়ার আগে অবশ্যই এই কাজগুলোর বিষয়ে ভালো করে প্রশিক্ষণ নিয়ে যেতে পারেন।
পোল্যান্ডে কাজের বেতন কত?
যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই বেতন কাঠামো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। তাই পোল্যান্ডের কাজের ভিসা যদি করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম পোল্যান্ডে কোন কাজের কত টাকা বেতন দেওয়া হয়ে থাকে এই সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
পোল্যান্ডে অধিকাংশ ব্যক্তি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন । অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে যদি পোল্যান্ডে গিয়ে রেস্টুরেন্টের কাজ,কনস্ট্রাকশন এর কাজ ও পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করে থাকেন তাহলে ৭০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ পোল্যান্ডে বেতন পেতে পারেন।
পোল্যান্ড থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়?
পোল্যান্ডের নাগরিক ও সেখানে অবস্থানরত ব্যক্তিদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে অনেক দেশে ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু পোল্যান্ড সেনজেন ভুক্ত একটি দেশ তাই পোল্যান্ডে কেউ কাজের জন্য গেলে সে সেনজেনভুক্ত অন্যান্য দেশেও ভ্রমণ করতে পারবে।
পোল্যান্ড থেকে চাইলে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, বেলারুশ, রোমানিয়া, ইউক্রেন, ও ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে খুব সহজেই যাওয়া যাবে। সহজ ভাষায় যদি বলা যায় ২৭ টি সেনজেনভুক্ত দেশের মধ্য থেকে যেকোনো দেশে যেতে পারবেন শুধুমাত্র পোল্যান্ড গেলেই।
পোল্যান্ডের মুদ্রার নাম কি?
পোল্যান্ডের মুদ্রার নাম কি বা পোল্যান্ডের এক টাকা সমান বাংলাদেশের কত টাকা এই নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। পোল্যান্ডের মুদ্রার নাম জলোটি বলা হয়ে থাকে ।পোল্যান্ডের এক জলোটি সমান বাংলাদেশি প্রায় ২২ টাকার কাছাকাছি।
শেষকথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা পোল্যান্ড যাওয়ার উপায় বা পোল্যান্ড কাজের বেতন কত এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url