বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায় | সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে

সুইজারল্যান্ড খুবই সুন্দর একটি দেশ। সুইজারল্যান্ডে অনেকে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাই।ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া অনেকটা সহজতর হলেও এশিয়ার দেশগুলো থেকে সুইজারল্যান্ডের যাওয়া অনেকটা কষ্টকর। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই কাজের ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ড যেতে চান।
সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ড
তবে সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য সকল সময় কাজের ভিসা চালু থাকে না। আজকের পোস্টে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়,সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে, সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়?

সুইজারল্যান্ডে কয়েক ধরনের ভিসার মাধ্যমে যাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা, ও কাজের ভিসা নিয়ে অনেকেই দেশটিতে যায়। তবে সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি করতে হয় বা কোন ধরনের শর্তাদি পালন করতে হয় এটা সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। নিচে সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার উপায় তুলে ধরা হলোঃ

সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা?

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনজেন ভুক্ত দেশ সুইজারল্যান্ডকে  স্বর্গরাজ্য হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। সুইজারল্যান্ড দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর যার কারণে অনেকে সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ করতে চান। সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ করার জন্য সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা নেওয়া যাবে। সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা নেওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
  •  সুইজারল্যান্ডে যেতে হলে অবশ্যই একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং সেখানে নূন্যতম ছয় মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
  •  ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটি সম্পূর্ণ পূরণ করে নিতে হবে।
  •  এক কপি ছবি লাগবে এবং তার ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে।
  • এনওসি লাগবে।
  • আপনি যদি কোন কোম্পানির বা সরকারি চাকরিজীবী কোন ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অফিস থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে।ছাত্র হয়ে থাকলে ইউনিভার্সিটি অথবা কলেজ থেকে নিতে হবে
  • ব্যাংক স্টেটমেন্টের প্রয়োজন হবে এবং সেখানে আপনাকে ৬ লাখ টাকা দেখাতে হবে।
  • মেডিকেল রিপোর্ট দেখাতে হবে ও ইনকাম ট্যাক্স এর স্লিপ দেখাতে হবে।
  • যে সকল জায়গায় ভ্রমণ করতে যান সেখানকার নাম উল্লেখ করতে হবে।
  • হোটেল বুকিং এর পেপার দিতে হবে।
  • করোনা টিকা কার্ড লাগবে।
সুইজারল্যান্ডে টুরিস্ট ভিসায় যেতে হলে অবশ্যই আবেদনকারী ব্যক্তি কে এই সকল ডকুমেন্টগুলো জমা দিয়ে সরাসরি বাংলাদেশে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাস থেকে টুরিস্ট ভিসা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা ফি কত টাকা?

সুইজারল্যান্ড দেশটি অনেক সুন্দর হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে সুইজারল্যান্ডে হাজার হাজার মানুষ ভ্রমণ করার জন্য যায়।বাংলাদেশ থেকেও অনেকেই সুইজারল্যান্ড এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য যেতে চান। সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা করার জন্য ভিসা ফি ৫ হাজার ৭০০ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে।

সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা?

সুইজারল্যান্ড হচ্ছে ইউরোপ মহাদেশের অন্যতম সেরা উন্নত একটি দেশ। সুইজারল্যান্ডে শ্রমিকদের কাজের রয়েছে বাড়তি সুযোগ সুবিধা। তাছাড়া সেখানে বেতন অনেক বেশি হয় অনেকেই সুইজারল্যান্ডে কাজের উদ্দেশ্যে যান। তবে সুইজারল্যান্ডে সরাসরি কাজের ভিসা নিয়ে কোন ব্যক্তি যেতে পারবেন না। 

কেননা এর জন্য প্রথমে আপনাদেরকে হোম পারমিট ভিসা নিতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের ওয়েব সাইটে সর্বপ্রথম কাজের সন্ধান করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা তাছাড়া সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য কাজের ভিসা প্রদান করে থাকে।

সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?

সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা নিতে হলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হবে। এই ডকুমেন্টগুলো ছাড়া কোনভাবেই সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া যাবে না।যেমনঃ
  •  সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য একটি বৈধ পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।
  •  পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি লাগবে যার ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হতে হবে।
  •  চিকিৎসা বীমা লাগবে।
  •  ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি লাগবে।
  •  একটি কভার লেটার থাকবে যেখানে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করা হবে।
  •  ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
  •  সুইস ভিসা প্রদানের রশিদ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লাগবে।
সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য কাজের ভিসা নিতে হলে অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে। এই ডকুমেন্টগুলো এম্বাসিতে জমা দিয়ে সুইজারল্যান্ড হোম পারমিট ভিসা পাবেন।

সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসায় যাওয়ার আগে অনেকের প্রশ্ন থাকেন সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের সুবিধা বেশি।কেননা নির্দিষ্ট কাজের উপর যদি দক্ষ হয়ে যাওয়া যায় তাহলে সেখানে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়া যাবে। সুইজারল্যান্ডে অনেক বিলাসবহুল হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। 

এই সকল হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সেফ বা রান্নার লোক হিসেবে কাজ করতে পারলে অনেক বেশি টাকা বেতন পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া সুইজারল্যান্ডের ড্রাইভিং কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে তাই যদি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে থাকে তাহলে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা অনুমতি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে ড্রাইভিং কাজের জন্য যেতে পারেন।

সুইজারল্যান্ডে বেতন কেমন?

সুইজারল্যান্ডে প্রবাসীরা কাজের বেতন অনেক বেশি পেয়ে থাকেন।সুইজারল্যান্ডে একজন প্রবাসীর বার্ষিক গড় বেতন ১ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৫ মার্কিন ডলারের মতো।তাহলে মাসের হিসাবে আসে বাংলাদেশের টাকায় ১২ লাখ টাকা। 

তাছাড়া রেস্টুরেন্ট বা বিভিন্ন হোটেলে কাজ করে থাকেন তারা প্রথম অবস্থায় গিয়ে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করে থাকেন। পরবর্তীতে যখন তাদের অভিজ্ঞতা বাড়ে তারা মাসে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন।

সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে?

সুইজারল্যান্ড ভিসার দাম কত বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ কত হয়ে থাকে এই নিয়ে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে।সুইজারল্যান্ড যেহেতু খুবই উন্নত একটি দেশ তাই এই দেশে ভিসার খরচ অনেক বেশি। সুইজারল্যান্ড যাওয়ার জন্য যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে আবেদন করে থাকেন তাহলে ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মধ্যেই যেতে পারবেন।

আর যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে সুইজারল্যান্ড টুরিস্ট ভিসায় যাওয়ার জন্য খরচ অনেক কম লাগতে পারে।

শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড ভিসা পাওয়ার উপায় ও সুইজারল্যান্ড ভিসা খরচ কত এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url