আর রাহীকুল মাখতুম pdf বইটি ফ্রি ডাউনলোড করুন

আসসালামু আলইকুম, বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আপনি যদি আর রাহীকুল মাখতুম বইটি ফ্রি ডাউনলোড করতে চান তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ

কিভাবে আর রাহীকুল মাখতুম বইটি ফ্রি ডাউনলোড  করবো

আপনি নিশ্চয় জানতে চান কিভাবে আর রাহীকুল মাখতুম বইটি ফ্রি ডাউনলোড করবো। তাহলে আর রহিতুল মাখতুম বইটি ফ্রি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন- আর রহিতুল মাখতুম

আর রাহীকুল মাখতুম বইটির লেখক 

আর রাহীকুল মাখতুম বইটির লেখক সফিউর রহমান মুবারকপুরী (১৯৪২-২০০৬) (আরবি: صفي الرحمن المباركفوري‎‎) পুরো নাম সফিউর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মোহাম্মদ আকবর ইবনে মোহাম্মদ আলী ইবনে আব্দুল মোমেন মুবারকপুরী আযমী।

জন্ম বংশ

ভারতের উত্তর প্রদেশের আযমগড় জেলার মুবারকপুর শহরটি বিখ্যাত তার তাঁত শিল্পের জন্য।এছাড়া মুবারকপুর বিখ্যাত ইলমে হাদিসের নক্ষত্রের সূতিকাগার হিসেবেও।সুনানে তিরমিজির বিশ্ববিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ 'তুহফাতুল আহওয়াযী'-এর লেখক আব্দুর রহমান মুবারকপুরী ,মিশকাতের বিখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থ 'মিরআতুল মাফাতীহ' এর রচয়িতা ওবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী ,আব্দুস সালাম মুবারকপুরী সহ আরো অনেক নন্দিত বিদ্বানদের জন্ম স্থান হচ্ছে মুবারকপুর। 

এই মুবারকপুরের ছোট্ট একটা শহর হুসাইনাবাদে ১৯৪২ সালের জুন জন্ম গ্রহণ করেন সফিউর রহমান। মুবারকপুরের দিকে সম্পৃক্ত করে মুবারকপুরী, আযমগড়ের দিকে সম্পৃক্ত করর তাকে আযমী আর হুসাইনাবাদের সথে যুক্ত করে কখনো কখনো হুসাইনাবাদীও বলা হয়ে থাকে।[]

শিক্ষা জীবন

বাল্যকলে নিজের দাদা মুহাম্মদ আকবর চাচা মাওলানা আব্দুছ ছামাদের কাছে কুরআন মাজিদ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষায় হাতেখড়ি হয় মুবারকপুরী। এরপর ১৯৪৮ সালে ভর্তি হন মুবারকপুরের দারুত তা'লিম মাদরাসায়। সেখানে তিনি বছর পর্যন্ত প্রাথমিক মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা করেন।সাথে চর্চা করেন ফার্সি ভাষা শিক্ষাও। 

আরো পড়ুনঃ পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় 

অত:পর ১৯৫৪ সালের জুন মাসে ভর্তি হন মুবারকপুরের এহইয়াউল উলুম মাদ্রাসায়।সেখানে তিনি গভীর মনোযোগের সহিত আরবী ভাষা সাহিত্য,নাহু,ছরফ অন্যান্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। এর দুই বছর পর তিনি মুবারকপুর থেকে বের হয়ে চলে যান মৌনাথভঞ্জন এলাকায়।সেখানে তিনি ভর্তি হন বিখ্যাত আহলে হাদিস মাদ্রাসা 'ফয়েযে আম'-এ। 

সেখানে আরো পাঁচ বছর পড়াশোনা করেন।সেখানে তিনি আরবী ভাষা সাহিত্য, ব্যাকরণ, তাফসীর, হাদিস, উসুলে হাদিস, ফিকহ, উসুলে ফিকহ ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। ১৯৬১ সালে সেখান থেকে ফারেগ হন, শিক্ষা সমাপনী সার্টিফিকেট লাভ করেন সাথে পাঠদান ফতওয়া প্রদানের অনুমতিও প্রাপ্ত হন। 

দারসে নিযামীর পাশাপাশি আল্লামা এলাহবাদ বোর্ডের অধীনে ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে মৌলব এবং ১৯৬০ সালে আলেম পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৭৬ সালে ফাযেলে আদব ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেযেলে দ্বিনিয়াত পরীক্ষায়ও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।[]

মৃত্যু জানাযা

মুবারকপুরের এই ইলমী নক্ষত্রের পতন হয় ডিসেম্বর ২০০৬,শুক্রবার দিন বিকেল টার দিকে নিজ গ্রাম হুসাইনাবাদে।পরদিন শনিবার তার সুযোগ্য পুত্র তৎকালীন 'জামিআ ইসলামিয়া মিমবারা' মাদরাসার শিক্ষক মুহাম্মদ ইয়াসির মাদানীর ইমামতিতে তার জানাযার সালাত অনুষ্ঠিত হয়।

জানাযায় যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ।উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে যোগদেন মারকাযী জমঈয়ত আহলে হাদিস হিন্দ এর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল শায়খ আসগার আলী সালাফি।[১০]

আর রহিতুল মাখতুম বইটি মূল কাহিনী

আর্‌-রাহীকুল মাখতূম (আরবি/উর্দূতে: الرحيق المختوم ; অর্থ: মোহরাঙ্কিত জান্নাতী সুধা) আরবি এবং উর্দু ভাষায় সফিউর রহমান মোবারকপুরী রচিত মুসলমানদের নবী মুহাম্মদের জীবনীগ্রন্থ। আধুনিক যুগে ইসলামের নবী মুহাম্মদেরর জীবনী নিয়ে আরবি ভাষায় লেখা অন্যতম একটি সিরাত গ্রন্থ। 

আরো পড়ুনঃ রাতে বাচ্চারা কান্না করে কেন? করলে করণীয় কী

আরবি বইটি ১৯৭৯ সালে রাবেতায়ে আলাম আল ইসলামি কর্তৃক আয়োজিত মুহাম্মদের জীবনীর উপর আয়োজিত প্রথম উন্মুক্ত সিরাত গ্রন্থ প্রতিযোগিতায় ১১৮৭টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে।[][] গ্রন্থটি মূলতঃ সিরাতের ওপর রচিত অতীতের শত শত গ্রন্থের মৌলিক নির্ভরযোগ্য উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। এক কথায় সিরাত সংক্রান্ত বিশাল সংগ্রহশালার একটি নির্যাস গ্রন্থ।

তারই ধারাবাহিকতায় হিজরী ১৩৯৬ সনে রাবেতায়ে লামে ইসলামি সীরাতুন্নবী সম্পর্কিত গ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের বহু লেখক আগ্রহসহ অংশগ্রহণ করেন। ১১৮২টি পাণ্ডুলিপির মধ্যেআর রাহীকুল মাখতূম গ্রন্থটিকে প্রথম পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এক বিরল সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। আর দুর্লভ সম্মানের কৃতিত্ব, অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তার সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র তারই প্রাপ্য যাঁর আদর্শকে কেন্দ্র করে গ্রন্থ রচিত হয়েছে।

সাহিত্যকর্মের রূপ-রস, সৌন্দর্য, মাধুর্য, শোভনতা, সাবলীলতা প্রাঞ্জলতার মধ্যেই নিহিত রয়েছে উক্ত সাহিত্যকর্মের প্রকৃত মূল্য।আর রাহীকুল মাখতূম গ্রন্থের সুন্দর সাবলীল প্রকাশ ভঙ্গি এবং লেখকের মোহনীয় শক্তি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের অন্তরে। পাঠকের কথা বিবেচনায় রেখে লেখক গ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে গ্রন্থের কলেবর অস্বাভাবিক দীর্ঘ করেননি, আবার খুব বেশি সংক্ষিপ্তও করেননি। অথচ এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সীরাত গ্রন্থও বটে।

গ্রন্থ রচনায় লেখক ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের ধারাবাহিক বর্ণনা করেছেন এবং সেগুলোর বর্ণনায় তিনি বিভিন্ন অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়ে পর্যায়ক্রমিকভাবে বিন্যস্ত করেছেন। যেসব ঘটনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রন্থে মত পার্থক্য রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে লেখক সবকিছু পর্যালোচনা করে যেটি সঠিক মনে করেছেন সেটির উল্লেখ করেছেন। যেসব ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণকারীদের তথ্য লেখকের কাছে সঠিক মনে হয়নি সেসব ক্ষেত্রে তিনি যুক্তি প্রমাণের ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। আবার, তথ্যের উৎস হিসেবে গ্রন্থটিতে লেখক অসংখ্য গ্রন্থের নাম পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করেছেন।

গ্রন্থের শুরুতে লেখক রাসূল এর আবির্ভাবের পূর্বে পৃথিবীতে বিরাজমান বিভিন্ন অবস্থা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। আরবের ভৌগোলিক পরিচয়, তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন জাতির অবস্থান, আরবের নেতৃত্ব শাসন ব্যবস্থা, আরবদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতবাদ, জাহেলী সমাজের চারিত্রিক, অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থার চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে লেখক পৃথিবীতে রাসূল এর আবির্ভাবের গুরুত্ব তাৎপর্য অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অতঃপর রাসূল এর পবিত্র সংগ্রামী জীবনের প্রতিচ্ছবির এক অনবদ্য উপস্থাপনা গ্রন্থটিকে করেছে প্রাণবন্ত।

রাসূল এর দাওয়াতের বিভিন্ন কৌশল পর্যায় বর্ণনা হতে শুরু করে, বদর, ওহুদসহ বিভিন্ন যুদ্ধ, মক্কা বিজয়, বিদায় হজ্জ, রাসূল এর ওফাত পর্যন্ত সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনা বর্ণনার পর রাসূল এর পরিবারের পরিচিতি, রাসূল এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনার এক ব্যতিক্রমী উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে লেখক গ্রন্থটির পরিসমাপ্তি টানেন।

এই জীবনীগ্রন্থে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-য়ের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। রিয়াদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দ্য কুরআন পাবলিশিং এন্ড প্রিন্টিং এর তত্ত্বাবধানে এর সম্পাদনা সম্পন্ন হয়। ১৯৯৯ সালে খাদিজা আখতার রেজায়ী বইটির বাংলা অনুবাদ করেন এবং আল কুরআন একাডেমী পাবলিকেশন্স বইটি প্রকাশ করে। 

আরো পড়ুনঃ খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম - খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়

বইটি বাংলা ভাষায় অনূদিত হবার পর অত্যন্ত পাঠক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাত্র পঞ্চান্ন দিনের মাথায় বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ সহ পর্যন্ত পনের বছরে বইটির একুশটি সংস্করণ বের হয়েছে। পরবর্তীতে তাওহীদ পাবলিকেশন্স বইটির অনুবাদ বের করে। প্রকাশনী থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুল খালেক রাহমানী। বইটির নাম রাহিকূল মাখতূম এর অর্থ হল ছিপি আটা বোতল। 

লেখক এই জীবনীগ্রন্থের নামকরণ করেছেন পবিত্র কুরআনের সূরা মুতাফ্ফিফীনের আয়াত ২৫ থেকে। মূল বইটি প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠা হলেও বাংলা অনুবাদে ৫৩০ পৃষ্ঠা হয়েছে। বইটির ইংরেজি অনুবাদের নাম The Sealed Nectar.[]

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url