বেলজিয়াম বেতন কত - বেলজিয়াম যেতে কত টাকা লাগে

ইউরোপ মহাদেশের দেশ বেলজিয়ামে সারা বিশ্ব থেকে অনেকেই কাজের উদ্দেশ্যে যায়। তাছাড়া অনেকে দেশটিতে ভ্রমণ করার জন্য এসে থাকেন। দেশটি দেখতে যেমন ছবির মত সুন্দর তেমনি দেশটির মানুষগুলো অনেক নিয়ম শৃঙ্খলার সাথে বসবাস করে থাকে।
বেলজিয়াম
বেলজিয়াম
বেলজিয়ামে মাঝেমধ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। যখন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে লোক নেওয়া হয়ে থাকে তখন অনেক বাংলাদেশিরা বেলজিয়ামে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করে থাকেন। 

তাই আজকের পোস্টে বেলজিয়াম যাওয়ার উপায়, বেলজিয়াম ভিসা খরচ কত, বেলজিয়াম বেতন কত ও বেলজিয়ামে টাকার মান কেমন এই নিয়ে জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

বেলজিয়াম যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে বেলজিয়াম যাওয়ার উপায় অনেকটাই কঠিন। তবে কিছু এজেন্সি রয়েছে যাদের সাহায্যে বেলজিয়াম যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে নেওয়া যেতে পারে।সব থেকে ভালো হয় বেলজিয়াম যাওয়ার জন্য সরাসরি ইন্ডিয়া থেকে ভিসা আবেদন করা। ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত বেলজিয়াম দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করলে মাত্র তিন মাসের মধ্যে বেলজিয়াম যাওয়া সম্ভব হবে। 

প্রতিবছর বেলজিয়াম সরকার ভারত থেকে প্রচুর সংখ্যক কর্মী নিয়ে থাকে সেখানে কাজ করার জন্য।ভারত থেকে বেলজিয়াম অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে যাওয়া গেলেও খরচের পরিমাণটা একটু বেশি থাকে। কিন্তু ভারত থেকে বেলজিয়াম গেলে বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে থাকে যার মাধ্যমে অল্প সময়ে টাকা উঠে যায়। 

আর বাংলাদেশ থেকে বেলজিয়াম যেতে হলে অনেক দালাল রয়েছে তাদের মাধ্যমে যেতে পারেন। তবে এদের মাধ্যমে গেলে অনেক ঝুঁকি থাকে তাই আপনি চাইলে কোন এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

বেলজিয়াম যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

বেলজিয়াম যেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে। এই সকল ডকুমেন্ট গুলোর মধ্যে যদি একটিও ভুল করে থাকেন তাহলে আপনার ভিসা আবেদনটি বাতিল হয়ে যেতে পারে। নিচে বেলজিয়াম যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলোঃ
  • একটি দুই বছর মেয়াদ সম্পূর্ণ বৈধ পাসপোর্ট লাগবে।
  • ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  •  দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসা? আবেদন করার জন্য অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো লাগবে। তাই অবশ্যই সঠিকভাবে ভিসা আবেদনের সময় এই ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে দিতে হবে।

বেলজিয়াম ভিসার দাম কত | বেলজিয়াম যেতে কত টাকা লাগে

অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে যেহেতু বাংলাদেশে বেলজিয়ামের কোন এম্বাসি নেই তাই বেলজিয়াম যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে। বর্তমানে বেলজিয়াম ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম হচ্ছে ৯০০ ডলারের মত। তবে দালালের মাধ্যমে যাওয়া লাগে বলে অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে থাকে। 

কোন দালাল ধরে যদি ভারতের দিল্লি থেকে বেলজিয়াম যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারেন তাহলে ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। যেহেতু ভারতে সরকারি ও বেসরকারি অনেক এম্বাসি রয়েছে এই সকল এম্বাসি গুলোর সাথে বাংলাদেশের যে সকল এম্বাসিগুলো রয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমেই সাধারণত ভিসার দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

বেলজিয়ামে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

বেলজিয়াম ইউরোপ মহাদেশের খুবই উন্নত একটি দেশ। তাই এই দেশে কাজ করতে হলে অবশ্যই যেকোনো কাজের বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বেলজিয়াম সরকার সকল সময় অভিজ্ঞ কর্মীদের বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। বেলজিয়ামে নির্মাণ শ্রমিক,  ফ্যাক্টরি ও রেস্টুরেন্টে কাজের জন্য প্রচুর লোক নেওয়া হয়ে থাকে। 

এই সকল কাজগুলোর বেতন বেলজিয়ামে অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া যারা ভালো ড্রাইভিং করতে পারেন তাদের জন্যও বেলজিয়ামে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বেলজিয়ামে যারা ড্রাইভিং এর কাজ করে থাকে তারা মাসে ২ লক্ষ টাকার উপরে বেতন পেয়ে থাকেন।

তাছাড়া যারা আইটি খাতে ভালো কাজ করেন তারা বেলজিয়ামে গিয়ে অনেক ধরনের চাকরির সুযোগ পাবেন। বেলজিয়ামের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট,  গেম ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং সহ আইটি খাতে বিভিন্ন কাজের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এই সকল কাজে অনেক বেশি টাকা বেতন পেয়ে থাকেন যার মাধ্যমে তাদের খুব দ্রুতই জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে।

বেলজিয়ামে কাজের বেতন কত?

বেলজিয়ামে শ্রমিকদের অনেক বেশি টাকা মজুরি দেওয়া হয়ে থাকে। আর এখানে বেতনের পরিমাণ নির্ভর করে সাধারণত কাজের ধরনের উপর। যারা বেলজিয়ামে নির্মাণ শ্রমিক ভিসায় গিয়ে কাজ করে থাকেন তারা প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে বেতন পেয়ে থাকেন। 

তাছাড়া যারা রেস্টুরেন্ট ভিসায় বেলজিয়াম গিয়ে কাজ করে থাকেন তারা প্রতিমাসে এক লাখ থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। যারা বেলজিয়ামে ফ্যাক্টরি ভিসায় কাজ করে থাকেন তারা ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। 

যারা বেলজিয়ামে ড্রাইভিং কাজ করে থাকেন তারা প্রথম অবস্থায় এক লাখ ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো বেতন পান। তবে বেলজিয়ামে কাজের অভিজ্ঞতার ওপর বেতনের পরিমাণ বাড়ানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ যত সময় যাবে আপনার বেতনের পরিমাণ তত বাড়তে থাকবে।

বেলজিয়াম টাকার মান কেমন?

অনেকে বেলজিয়ামের টাকার মান কেমন বা বেলজিয়ামের এক টাকা সমান বাংলাদেশের কত টাকা এই বিষয়ে জানতে চান। বেলজিয়ামের মুদ্রা কে সাধারণত ইউরো বলা হয়ে থাকে। এই ইউরো ব্যবহার করে বেলজিয়ামের অভ্যন্তরে লেনদেন করা যায়। 

বর্তমানে বেলজিয়ামের ১ ইউরো সমান বাংলাদেশি ১১৮ টাকার কাছাকাছি। বেলজিয়ামের ১০০ ইউরো সমান বাংলাদেশি ১১৮৯৩ টাকার কাছাকাছি।

শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা বেলজিয়াম যাওয়ার উপায় ও বেলজিয়াম যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। 

তারপরও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url