ইরাক যেতে কত টাকা লাগে - ইরাক ভিসা ফর বাংলাদেশী

ইরাক খুবই সুন্দর একটি দেশ। ইরাকে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান যার কারণে অনেকেই ইরাক ভ্রমণ করতে চাই। অন্যান্য দেশ থেকে ইরাক যাওয়া অনেক সহজ হলেও বাংলাদেশ থেকে ইরাকে যাওয়া অনেকটাই কঠিন।
ইরাক
ইরাক
আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন ইরাক যাওয়ার উপায়, ইরাক যেতে কত টাকা লাগে ও ইরাকে কাজের বেতন কত এই সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

ইরাক যাওয়ার উপায়?

ইরাক আরবের একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে ইরাক অর্থনৈতিক দিক থেকে তেমন বেশি শক্তিশালী অবস্থানে নেই। ইরাকে হয়তো অনেকেই টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ঐতিহাসিক স্থান গুলো দেখার জন্য যাই কিন্তু কাজের ভিসা নিয়ে অনেক কম লোক যায়। 

ইরাকে টুরিস্ট ভিসা পাওয়া সহজ হলেও কাজের ভিসা সচরাচর তেমন পাওয়া যায় না। কেননা ইরাক সরকার বাইরে দেশ থেকে তেমন লোক নিয়োগ দেয় না। তবুও মাঝেমধ্যে ইরাকে কাজের জন্য বাইরে থেকে ভালো বেতনে কর্মী নেওয়া হয়ে থাকে।

ইরাক টুরিস্ট ভিসা?

ইরাকে যারা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাদেরকে ইরাক টুরিস্ট ভিসা নিতে হয়। বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত অনেক এজেন্সি রয়েছে যার মাধ্যমে খুব সহজেই ইরাকের টুরিস্ট ভিসা নেওয়া যায়। 

বাংলাদেশিরা যদি ইরাক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে টুরিস্ট ভিসা নিতে চায়। তাহলে বিএমইটি মাধ্যমে আবেদন করে টুরিস্ট ভিসা নিতে পারেন। এক্ষেত্রে খরচের পরিমাণও অনেক কম হবে এবং কোন ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ইরাক ভ্রমণ করতে পারবেন।

ইরাক কাজের ভিসা?

ইরাকে বেশ কিছু বছর ধরে বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের ভিসাই মাঝেমধ্যে লোক নিয়োগ দিচ্ছে। তাছাড়া ইরাক সরকার আশ্বস্ত করেছে এই সকল কর্মীদের নিরাপদ স্থানে কাজের সুযোগ করে দিবে। ইরাকে এই সকল কর্মীরা রেস্টুরেন্ট সেলসম্যান ও ওয়েটারের কাজ করতে পারবেন সেখানে গিয়ে।

ইরাকের কাজের ভিসা পেতে হলে বাংলাদেশের বিএমইটি বা বায়োসেলের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। কেননা বাংলাদেশের এই দুইটি এজেন্সির মাধ্যমে সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়া সম্ভব। তাই এখানে যোগাযোগ করার মাধ্যমে খুব সহজেই ইরাকের ভিসা পাওয়া সম্ভব।

ইরাক যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

ইরাকের ভিসা পেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। এই সকল ডকুমেন্ট ছাড়া কোনভাবেই ইরাক ভিসা পাবেন না। নিচে ইরাক যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে তা উল্লেখ করা হলোঃ
  • আবেদন  কারীর পাসপোর্ট লাগবে।
  • আবেদনকারী ব্যক্তির দুই কপি ছবি লাগবে।
  • আবেদন কারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
  • কাজের অভিজ্ঞতা সনদ লাগবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লাগবে।
  • জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি লাগবে।
  • সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ লাগবে।
ইরাক যাওয়ার জন্য সাধারণত এই ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই লাগবে। তবে আরো কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে সেগুলো আপনাকে এজেন্সি থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ইরাকে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

ইরাকে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার আগে অবশ্যই ইরাকে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। কেননা যদি জানতে পারেন ইরাকে কোন কাজের চাহিদা বেশি সেই কাজগুলোতে বাংলাদেশেই দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

এর মাধ্যমে সেখানে গিয়ে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন। তাই অবশ্যই ইরাক যাওয়ার আগে ইরাকে কোন কাজের চাহিদা বেশি নিচে এরকম কিছু তালিকা দেওয়া হলো দেখে নিতে পারেনঃ
  • রেস্টুরেন্টের কাজ
  • হোটেলের কাজ
  • ওয়েটার সার্ভিসের কাজ
  • সেলসম্যানের কাজ
  • ড্রাইভিং কাজ
  • মেডিকেল ক্লিনিং এর কাজ
  • কৃষিকাজ
  • পরিছন্নতা কর্মীর কাজ
যারা ইরাকে কাজের ভিসায় যেতে চান তাদের এই কাজগুলোর উপরে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। কেননা ইরাকে বেশিরভাগ কর্মীরাই এই কাজগুলো করে থাকেন।

ইরাকে কাজের বেতন কত?

ইরাকে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের মধ্যে অনেকেই ইরাকে কাজের বেতন কত এই বিষয়ে জানতে চান। আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন কাজে দক্ষতা সম্পন্ন হয়ে থাকেন এবং ইরাকে ভালো কোন কোম্পানিতে কাজ করেন তাহলে ১০০০ থেকে ১৫০০ ডলার বেতন পেতে পারেন।

এক্ষেত্রে যদি ভালো কোম্পানিতে কাজ করার পাশাপাশি চার ঘন্টা ওভারটাইম করেন তাহলে ১৫০০ ডলার থেকে আপনার বেতন ২০০০ ডলার হতে পারে। ইরাকে কাজ করার একটি সুবিধা হচ্ছে এখানে সৌদি আরবের মত কোন কোম্পানিতে আপনাকে বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করতে হবে না। 

ইরাকে কোন কোম্পানিতে কাজ করার পাশাপাশি আপনারা চাইলে অন্য কোন কোম্পানিতে ওভারটাইম করতে পারবেন। যার ফলে সাধারণত ইরাকে কাজের বেতন সৌদি আরবের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে।

ইরাক যেতে কত টাকা লাগে | ইরাক ভিসার দাম কত

যারা ইরাকে সরকারিভাবে যেতে চায় তাদের সাধারণত ১০০০ ডলারের মত খরচ এসে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন এজেন্সি বা দালালের হাত ধরে যদি ইরাক কাজের ভিসা করতে চান। তাহলে আপনাদের খরচের পরিমাণ ২০০০ ডলার থেকে ৩০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। তবে ইরাকের এম্বাসি থেকে যদি কাজের ভিসা নিতে পারেন তাহলে খরচের পরিমাণ আরো কম হবে।

ইরাক টাকার মান | ইরাকের এক টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

অনেকেই ইরাকে টাকার মান কেমন বা ইরাকের এক টাকা সমান বাংলাদেশের কত টাকা এই বিষয়ে প্রশ্ন করে থাকেন।বর্তমানে এক ইরাকি দিনার সমান বাংলাদেশী ০.০৮৩ টাকার মত। ইরাকের ১০০০ টাকা সমান বাংলাদেশি ৮৩ টাকার কাছাকাছি।

শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে ইরাক ভিসা পাওয়ার উপায় ও ইরাক যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরে যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url