পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে - পোল্যান্ডে বেতন কত
পোল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই পোল্যান্ডে কাজের উদ্দেশ্যে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ও ভ্রমণ করতে যাই। অনেকেই আছেন যারা পোল্যান্ড যাওয়ার উপায়, পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে, পোলান্ডে কাজের বেতন কত এই বিষয়ে জানেন না।
পোল্যান্ড |
পোল্যান্ড যাওয়ার সহজ উপায়?
বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে পোল্যান্ড যেতে হলে অবশ্যই একটি ভিসার দরকার হবে। ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া কখনোই পোল্যান্ড যাওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ থেকে তিন ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজেই পোল্যান্ড যাওয়া যাবেঃ- পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা
- পোল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা
- পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসা
তাহলে চলুন এবার এই তিন ধরনের ভিসা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া যাকঃ
পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা?
পোল্যান্ডে যারা পড়াশোনার জন্য যেতে চান তাদেরকে পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা নিতে হয়। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা করার জন্য দেশটিতে এসে থাকেন। পোল্যান্ডে পড়াশোনার মান অনেক ভালো হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের এই দেশটিতে যাওয়ার অনেক আগ্রহ রয়েছে। তাছাড়া ছাত্রদের আরো একটি পছন্দের বিষয় হলো পোল্যান্ড খুবই শান্তশিষ্ট একটি দেশ তাই এখানে পড়াশোনাসহ যাবতীয় কাজ করতে কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা?
পোল্যান্ডে ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে যারা যায় তাদেরকে পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা নিতে হয়। অনলাইনে অথবা সরাসরি পোল্যান্ডের এম্বাসি থেকে পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। পোল্যান্ডে সাধারণত ৩০ থেকে ৯০ দিন মেয়াদী টুরিস্ট ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে।পরবর্তীতে যদি কোন ব্যক্তি ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চাই তাহলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে বাড়াতে হবে। নিচে পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে তা উল্লেখ করা হলোঃ
- পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পেতে ছয় মাস মেয়াদ সম্পূর্ণ একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- বিমানের এয়ার টিকিটের ফটোকপি লাগবে।
- হোটেল বুকিং এর ফটোকপি লাগবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি লাগবে
- অন্যান্য দেশের ট্রাভেলের প্রমাণপত্র লাগবে
এম্বাসির মাধ্যমে পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা হাতে পেতে ২৮ দিন থেকে ৩৮ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
পোল্যান্ড কাজের ভিসা?
পোল্যান্ড কাজের ভিসা খুব সহজেই পোল্যান্ড দূতাবাস থেকে পাওয়া যাবে। পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় লোক নিলে দূতাবাসের মাধ্যমে পোল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে।দালাল অথবা পোল্যান্ড দূতাবাসের মাধ্যমে যে কাজের ভিসা পাওয়া যাবে সেটা সাধারণত এক বছর মেয়াদী হবে। তবে কেউ চাইলে পরবর্তীতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
পোল্যান্ডে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়ার আগে অবশ্যই পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই বিষয়টা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।নিচে পোল্যান্ডে সর্বাধিক চাহিদা সম্পূর্ণ কয়েকটি কাজের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- হোটেলের কাজ
- ক্লিনার এর কাজ
- খাবার ডেলিভারির কাজ
- ড্রাইভিং এর কাজ
- হাউসকিপারের কাজ
- ফ্যাক্টরিতে কাজ
পোল্যান্ড কাজের বেতন কত?
পোল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি এই বিষয়ে ইতিমধ্যে জানা হয়ে গেলেও পোল্যান্ডে কোন কাজের জন্য কত টাকা বেতন দেওয়া হয়ে থাকে এই নিয়ে অনেকেরই ধারণা নেই। পোল্যান্ডে যেসকল জেনারেল কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার রয়েছে তাদের বেতন মাসে ৩২০০ থেকে ৩৫০০ জোলেটি।যা বাংলাদেশী টাকায় হিসেব করলে ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। তাছাড়া এই কাজে যারা হেল্পার হিসাবে রয়েছে তাদের বেতন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে। পোল্যান্ডে যারা ফার্নিচারের কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন।
তাছাড়া পোলান্ডে ওয়ার হাউজে কাজের জন্য মাসে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়। পোল্যান্ডে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে যে সকল কর্মীরা কাজ করে থাকেন তারা মাঠে ৫০ থেকে ৬০ হাজার সর্বনিম্ন বেতন পেয়ে থাকেন।
পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে?
পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে এটা সাধারণত নির্ভর করে থাকে ভিসার ধরনের ওপর। যেহেতু অনেকেই পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও পোল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করে যাই তাই এক্ষেত্রে ভিসার ধরন অনুযায়ী খরচ কম বেশি হবে।যারা পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের খরচ পড়বে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার মতো। তবে পোল্যান্ডে যদি কোন আত্মীয় থেকে থাকে এবং তার মাধ্যমে যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন তাহলে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা খরচেই পোল্যান্ড যেতে পারবেন।
যারা পোল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাদের খরচ পড়বে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। তাছাড়া অনেকেই রয়েছেন যারা ভ্রমণের জন্য পোল্যান্ড যেতে চান। টুরিস্ট ভিসায় পোল্যান্ড যেতে হলে এক লক্ষ টাকার মত খরচ আসতে পারে।
পোল্যান্ড যেতে কত বয়স লাগে?
পোল্যান্ডে যেতে কত বয়স লাগে বা পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন বয়সসীমা কত হওয়া উচিত এই নিয়ে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। পোল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে হলে বয়সসীমা সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে।যারা পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান তাদের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ২০ হতে হবে। তবে টুরিস্ট ভিসাই পোল্যান্ড যেতে বয়সের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
পোল্যান্ড এম্বাসি ঢাকা কোথায়?
এম্বাসির মাধ্যমে অনেক সহজ ভাবে ভিসা আবেদন করা যায়। অনেকেই বাংলাদেশ পোল্যান্ডের কোন embassy রয়েছে কিনা বা পোল্যান্ডের এম্বাসি ঢাকার কোথায় অবস্থিত এই বিষয়ে জানেন না। যাদের এই প্রশ্নটি রয়েছে তাদের সুবিধার জন্য বলে রাখা ভালো যে বাংলাদেশে পোল্যান্ডের কোন এম্বাসি নেই।তবে পোলান্ডে বাংলাদেশের একটি অ্যাম্বাসি রয়েছে এবং পোল্যান্ড সরকার আশ্বাস দিয়েছে খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের পোল্যান্ডের এম্বাসি চালু করবে।
পোল্যান্ড কি সেনজেন ভুক্ত দেশ?
পোল্যান্ড ইউরোপের সেনজেনুভুক্ত একটি দেশ। বর্তমানে যে ২৭ টি সেঞ্জেন ভুক্ত দেশ রয়েছে তার মধ্যে পোল্যান্ডের নাম রয়েছে। তাই পোল্যান্ডে ভিসা নিয়ে গেলে অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে কেননা পোল্যান্ড একটি সেনজেন ভুক্ত দেশ।পোল্যান্ডের মুদ্রার নাম কি?
বাংলাদেশের মুদ্রাকে যেমন টাকা বলা হয়ে থাকে তেমনি পোল্যান্ডের মুদ্রা কে জলোটি বলা হয়। বর্তমানে পোল্যান্ডের এক জলোটি সমান বাংলাদেশি ২৫.২৪ টাকার কাছাকাছি। তাহলে পোল্যান্ডের ১০০ টাকা সমান বাংলাদেশি ২৫২৪ টাকার কাছাকাছি।পোল্যান্ড থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়?
পোল্যান্ড যেহেতু সেনজেন ভুক্ত একটি দেশ তাই পোল্যান্ডে যদি সেনজেন ভিসা নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে সেনজেনভুক্ত সব কয়টি দেশে যাওয়া যাবে। অর্থাৎ সেনজেন ভুক্ত যে ২৭টি দেশ রয়েছে পোল্যান্ডের সেনজেন ভিসা নিয়ে গেলে বাকি ২৭ টা দেশেও আপনারা ভ্রমণ করতে পারবেন।শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম ও পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন।
তারপরেও যদি পোল্যান্ড ভিসা সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url