পর্তুগাল বেতন কত - পর্তুগাল ভিসা আবেদন

উন্নত জীবনধারণের সুবিধা ও ভালো কাজের উদ্দেশ্যে অনেকেই পর্তুগাল যেতে চান। পর্তুগাল যেতে হলে অবশ্যই বৈধভাবে যেতে হবে ও পর্তুগাল ভিসার মাধ্যমে যেতে হবে। পর্তুগাল থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সহ কয়েক ধরনের ভিসা পাওয়া যায়।
পর্তুগাল ভিসা
পর্তুগাল ভিসা
বেশিরভাগ ব্যক্তি পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চাই এবং সেখানে গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করতে চাই। পর্তুগাল ভিসা নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন রয়েছে তাই আজকের পোস্টে পর্তুগাল ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়? পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে ও পর্তুগাল বেতন কত এই নিয়েই থাকছে মূল্যবান কিছু তথ্য।

পর্তুগাল যাওয়ার উপায়?

বিভিন্ন দেশ থেকে পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও ভিজিট ভিসা ব্যবহার করে অনেকেই কাজের উদ্দেশ্যে যায়। সম্প্রতি আবারো পর্তুগাল থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু করা হয়েছে। পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার জন্য অনেকেই আবেদন করছে কিন্তু সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। 

নিম্নে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি করা লাগে তা উল্লেখ করা হলোঃ

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশিরা চাইলে পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ব্যবহার করে যেতে পারবেন। তবে অনেকের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকেনা। বর্তমানে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অনলাইনের মাধ্যমে অথবা ভারতীয় এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।

যেহেতু বাংলাদেশের পর্তুগালের কোন embassy নেই তাই এক্ষেত্রে ভারতীয় এমবাসির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

এম্বাসির মাধ্যমে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন?

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করার জন্য আপনাদেরকে সর্বপ্রথম দিল্লিতে অবস্থিত vps global এ চলে যেতে হবে। তবে এর জন্য আপনাদেরকে সর্বপ্রথম ভারতে ভিজিট ভিসা ব্যবহার করে তারপরে যেতে হবে। 

কেননা ভারতে যদি যেতে না পারেন তাহলে কোন ভাবেই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তারপরে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রদান করে যে ক্যাটাগরির কাজের ভিসা চান তার জন্য আবেদন করতে হবে। 

এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো আপনার কাছ থেকে নিয়ে স্ক্যান করে জমা রাখা হবে। তাছাড়া এই সময়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি গ্রহণ ও সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। তারপরে ভিসা প্রসেসিং শুরু হয়ে যাবে ও বাংলাদেশে ফেরত আসার জন্য পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। 

ভিসা প্রসেসিং সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। তখন আবার ভারতে গিয়ে এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করা যাবে।

পর্তুগাল কাজের ভিসা অনলাইনে আবেদন?

পর্তুগালের কাজের ভিসা অনলাইনের মাধ্যমেও পাওয়া যায়।নির্দিষ্ট যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিগণ খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে পর্তুগাল কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেনঃ
  • প্রথমে https://pt.indeed.com/ এই লিংকটি ব্যবহার করে সরাসরি একটি ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে।
  • তারপরে আপনি যে কাজের জন্য ইচ্ছুক অথবা যে কাজ নিয়ে পর্তুগাল যেতে চান সেই কাজের নাম লিখে সার্চ করতে হবে। 
  • ধরুন আপনি রেস্টুরেন্টের কাজ করতে চান তাহলে restaurant job লিখে সেখানে সার্চ করতে হবে।
  • জব যদি আপনার সামনে চলে আসে তাহলে তথ্যবহুল সিভিটি সাবমিট করতে হবে।
  • যদি ভিসা আবেদনটি গৃহীত হয়ে থাকে তাহলে ইমেইলের মাধ্যমে ম্যানপাওয়ারসহ যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
  • ইমেইল করা হলে তখন ভারতের এম্বাসিতে গিয়ে ভিসা প্রসেসিং সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে।
এভাবে যারা অনলাইনের মাধ্যমে পর্তুগালে কাজের ভিসায় যেতে চান তারা খুব সহজেই উক্ত নিয়মে ভিসা প্রসেসিং করতে পারবেন।

পর্তুগাল ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে।
  • পাসপোর্টে সর্বনিম্ন ছয় মাসের বেশি মেয়াদ থাকতে হবে। তাছাড়া দুইটা বা তার অধিক ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
  • এন আই ডি কার্ডের নাম্বার প্রয়োজন হবে।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লাগবে।
  • মেডিকেল রিপোর্টের প্রয়োজন হবে।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • দক্ষতা সার্টিফিকেট লাগবে বা প্রমাণ লাগবে।
যারা পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে চান তাদের অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে তাছাড়া অতিরিক্ত আর কোন ডকুমেন্ট লাগলে পর্তুগাল কনস্যুলেটের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে | পর্তুগাল ভিসা কত টাকা

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে করে থাকেন তাহলে ৭ থেকে ৯ লক্ষ টাকার মত খরচ আসতে পারে। তাছাড়া যারা দালালের মাধ্যমে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন তাদের ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে থাকে। 

তবে সরকারিভাবে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পাচ থেকে সাত লক্ষ টাকার মতো খরচ এসে থাকে।

পর্তুগাল কাজের বেতন কত?

পর্তুগালে কর্মীদের মাসিক বেতন আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে পর্তুগালে কর্মীদের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন ৭০৫ ইউরো। যা বাংলাদেশী টাকায় হিসেব করলে ৭০ হাজার টাকার অনেক ইউরো। পর্তুগালে যারা কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন। 

তারা প্রতি মাসে ৮০০ ইউরো, ফ্যাক্টরি ও বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত ব্যক্তিরা ৭০০ ইউরো, ড্রাইভিং কাজে কর্মরত ব্যক্তিরা ১০০০ ইউরো ও যারা হোটেল রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকেন তারা মাসে ১২০০ ইউরো আয় করে থাকেন।

পর্তুগাল এর মুদ্রার নাম কি | পর্তুগাল ১ ইউরো বাংলাদেশের কত

পর্তুগালের মুদ্রা কে ইউরো বলা হয়ে থাকে।বর্তমানে পর্তুগাল ১ ইউরো বাংলাদেশের কত টাকা পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার আগে অনেকেই জানতে চাই। 

পর্তুগালের ১ ইউরো সমান বাংলাদেশি ১১৭.৫৫ টাকা। তাহলে পর্তুগালের ১০০ ইউরো সমান ১১৭৫৪ টাকার মত হবে।

পর্তুগাল ভিসা এজেন্সি কোথায়?

অনেকেই বাংলাদেশে পর্তুগাল ভিসা এজেন্সি কোথায় বা বাংলাদেশে পর্তুগাল এম্বাসি রয়েছে কিনা এই বিষয়ে জানেন না। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে পর্তুগালের কোন embassy তৈরি হয়নি। বাংলাদেশ থেকে যারা পর্তুগাল ভিসা করতে যান। 

তাদেরকে সরাসরি ভারতে গিয়ে পর্তুগাল এম্বাসি বা Vfs গ্লোবাল এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তাহারা বাংলাদেশে অনেক সরকার স্বীকৃত কিছু  এজেন্সি রয়েছে যার মাধ্যমে পর্তুগাল ভিসা পাওয়া যেতে পারে।

পর্তুগাল ভিসা প্রসেসিং হতে কতদিন সময় লাগে? 

অনেকেই পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং হতে কত দিন সময় লেগে থাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করেন। পর্তুগাল এমবাসির মাধ্যমে যারা ভিসা আবেদন করে থাকেন। তাদের ভিসাটি প্রসেসিং হতে সাধারণত ৪৫ দিন থেকে ৯০ দিনের মত সময় লেগে থাকে।

আমাদের শেষ কথা, পর্তুগাল ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ পদ্ধতি। যেহেতু আমাদের দেশে পর্তুগালের কোন এমব্যাসির নেই তাই অনেকেই এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। 

তাই আজকের পোস্টে পর্তুগাল ভিসা নিয়ে বিস্তারিত ও মূল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি অনেকেই পড়ে উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url