রিসেলার ব্যবসা কি - কিভাবে রিসেলার ব্যবসা শুরু করবেন

আমাদের দেশে অনেক লোক আছে যারা এখন প্রতিনিয়ত চাকরির পেছনে ছুটছে। কিন্তু তারা জানে না বাংলাদেশের চাকরির বাজার অনেক কঠিন। তাই আমরা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছি যে চাকরির পিছনে ছুটাছুটি না করে রিসেলার ব্যবসা শুরু করুন। যারা ব্যবসা করে সুন্দর ক্যারিয়ার গড়তে চান তারা চাইলে রিসেলার ব্যবসায় করতে পারেন।

রিসেলার ব্যবসা কাকে বলে?

বর্তমান সময়ে রিসেলার ব্যবসার অনেক ধরণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও রিসেলার ব্যবসায় করতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি একজন চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলেও চাকরির পাশাপাশি পার্টটাইম রিসেলার ব্যবসায় করে খুব ভাল পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন।
রিসেলার ব্যবসা
রিসেলার ব্যবসা
রিসেলার ব্যবসায় করার জন্য অনেক ধরণের সুবিধা প্রদান করা হয়। সে সুবিধাগুলো আপনি যদি ভোগ করতে চান, তাহলে আপনি আগে এই রিসেলার ব্যবসায়টি শুরু করুন। এছাড়াও যারা বেশি টাকা আয় করতে চান তারা সকলেই এই ব্যবসায়টি করতে পারেন।

আপনি যদি এই রিসেলার ব্যবসাতে একজন নতুন প্রার্থী হয়ে থাকেন, তবে চিন্তার কোন কারণ নেই। আমরা আপনাকে জানাবো রিসেলার ব্যবসায় কি এবং রিসেলার ব্যবসায় শুরু করার উপায়। 

রিসেলার হল একটি ইংরেজি শব্দ। এর ইংরেজি অনুবাদ হবে (Re-Seller) ইংরেজি অনুবাদের বাংলা হল Re অর্থ পুনরায় আর Seller অর্থ হল বিক্রেতা। আর আমরা যদি এই দুটোকে এক সাথে সংযুক্ত করি তাহলে এটির নাম হবে রিসেলার।

রিসেলার মানে কি?

রিসেলার হল কোন বেক্তি অথবা কোম্পানি যে কোন দ্রব্য বা সেবা ক্রয় করে থাকে। যা পুনরায় বিক্রয়ের উদেশ্যে নিজ ভোগের জন্য না। অর্থাৎ কেউ যখন লাভের উদ্যেশে কোন দ্রব্য অথবা সেবা ক্রয় করে তা পুনরায় বিক্রি করবে বলে তখন সেই বেক্তিকে আমরা রিসেলার বলে থাকি। 

রিসেলার ব্যবসা কি?

আপনাকে বোঝানোর জন্য বলছি মনে করুন আপনি একটি খোলা বাজার থেকে কোন একটি পণ্য কিনে আনলেন এবং সেই পণ্যটি আবার অন্য কারো কাছে বিক্রি করলেন, তখন সেই বিক্রি কেই বলা হয় রিসেলার ব্যবসা।

রিসেলার ব্যবসা কত প্রকার ও কি কি?

আপনি যখন কোন ব্যবসায় শুরু করতে যাবেন তখন সেই ব্যবসায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক সেভাবেই আপনি যখন রিসেলার ব্যবসায় করতে যাবেন তার আগে অবশ্যই আপনাকে এই ব্যবসায় সম্পর্কে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিতে হবে। রিসেলার ব্যবসায় হল দুই প্রকার যেমনঃ 
  • অনলাইন রিসেলার ব্যবসায়
  • offline রিসেলার ব্যবসায়

অনলাইন রিসেলার ব্যবসায় কি?

আপনি যদি রিসেলার ব্যবসায় অনলাইনে করতে চান তবে এখানে প্রচুর পরিমাণ টাকা আয় করতে পারবেন। অনলাইনে ব্যবসায় করার উপায় হলঃ আপনি একটি মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার পছন্দমত কোন প্রোডাক্ট বা পণ্য ক্রয় করলেন। 

এরপর আপনার ক্রয় করা পণ্যটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করে বিক্রি করলেন। আর এভাবে ব্যবসায় করাকে বলা হয় অনলাইন রিসেলার ব্যবসা।

Offline রিসেলার ব্যবসায় কি?

আপনি যখন কোন রিসেলার ব্যবসা করবেন তখন আপনার কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হবে না। অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে হলে আপনাকে অনলাইন থেকে পণ্য কিনতে হবে ও সেগুলো আবার আপনাকে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে।

আর আপনি যদি অফলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান তবে আপনাকে খোলা মার্কেট থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয় করতে হবে ও সেই পণ্যটি আপনি বিভিন্ন উন্নতমানের মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিক্রি করতে পারবেন। এটি হচ্ছে অফ্লাইন রিসেলার ব্যবসায়।

কিভাবে অনলাইন রিসেলার ব্যবসা শুরু করবেন?

আপনি যদি রিসেলার ব্যবসা করতে চান, তবে এটি খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে করতে পারবেন। রিসেলার ব্যবসায় সুবিধা হল আপনাকে জায়গায় জায়গায় ঘুরতে হবে না, নিজের ঘরে বসেই এই ব্যবসায়টি সম্পন্ন করতে পারবেন, এবং ভাল পরিমাণে টাকাও আয় করতে পারবেন।

আপনি যদি রিসেলার ব্যবসায় অনলাইনের মাধ্যমে করতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। এবং সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি এই বিজনেস পরিচালনা করতে পারবেন।

রিসেলার ব্যবসা শুরু করার উপায় সমূহ কি কি?

একটি রিসেলিং ব্যবসায় শুরু করার অনেকগুলো ভাল দিক বা কারণ থাকতে পারে যেমনঃ

শুরু করা সহজ

যেকোন একটি নতুন ব্যবসায় শুরু করার জন্য প্রাথমিক যে উপাদানটি লাগে তা হচ্ছে টাকা অথবা মূলধন যাকে স্টার্টআপ কস্ট বলে। আর একজন নতুন উদ্যোক্তার কাছে কোন ব্যবসায় শুরু করার জন্য একটি বড় বাজেট তৈরি করা অনেক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। 

কিন্তু আপনি যদি রিসেলিং ব্যবসায় শুরু করতে চান তাহলে অনেক স্বল্প খরচ অথবা সম্পূর্ণ ফ্রীতেও তা করতে পারেন। আর এর ফলাফল খুব দ্রুত হয়, আপনি যেদিন থেকে রিসেলার ব্যবসা শুরু করবেন সেদিন থেকেই বিক্রয় শুরু করতে পারেন।

ভ্যারাইটি রেঞ্জ অফ প্রোডাক্ট

আপনি যদি একজন রিসেলার ব্যবসায়ী হন তাহলে শুধু গুটিকয়েক না বিভিন্ন ভ্যারাইটি অফ প্রোডাক্ট রিসেল করার সুযোগ পাবেন। আর যদি জামা কাপড় রিসেল করা শুরু করেন। আপনার ব্যবসায় যদি ভাল চলে তাহলে খুব সহজেই অন্যান্য প্রোডাক্ট। 

যেমনঃ জুতো, জুয়েলারি ও অন্যান্য একসেসোরিস আপনার স্টোরে যুক্ত করতে পারবেন এবং আরও বেশি কাস্টমারদের কাছে বিক্রয় করতে পারবেন।

ইনভেন্টরি বা স্টক হোল্ডের সমস্যা নেই

রিসেলিং বিজনেসের মধ্যে আরও একটি সুবিধা হচ্ছে আপনাকে প্রোডাক্টের কোন স্টক বা ইনভেন্টরি হোল্ড করতে হয় না। অর্থাৎ ইনভেন্টরি ক্রয় ও হোল্ড সংক্রান্ত কোন চাপ থাকে না। কাস্টমার যখন কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে শুধু তার মূল্যই আপনাকে প্রদান করতে হয়। আপনাকে শুধু প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে হয় এবং তা রিসেল করার জন্য সঠিক প্লাটফর্ম ঠিক করতে হয়।

ফিনান্সিয়াল রিস্ক কম থাকে

নতুন যারা উদ্যোক্তা রয়েছে তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ ব্যবসায়। কারণ হল এখানে ফিনান্সিল রিস্ক অনেক কম থাকে। কারণ হচ্ছে আপনাকে ইনভেন্টরি, লেবেলিং ও প্যাকেজিং সংক্রান্ত খরচ ওঠাতে হয় না, শিপিং চার্জও অনেক কম হয় আবার কিছু কিছু এপস ও প্লাটফর্মে একদমই ফ্রি হয়।

আপনি শুধু সেই সকল প্রোডাক্টের জন্যই পেমেন্ট করে থাকেন যেগুলো কাস্টমার আপনার বা আপনার স্টোর থেকে অর্ডার করে।

কম সময় ব্যয় করতে হয়

যারা রিসেলার তাদের এই বিজনেসের মধ্যে অধিক সময় ব্যয় করতে হয় না  কারণ বেশির ভাগ কাজটাই অটোমেটেড হয়। অর্থাৎ অল্প সময় এবং স্বাছন্দের সাথে এই ব্যবসায়কে পরিচালনা করতে পারেন তার সাথে প্যাকেজিং এবং শিপিং সংক্রান্ত ব্যয়ও আপনার হবে না। 

প্রফিট মার্জিন নিজেই ঠিক করতে পারেন

একজন রিসেলার ব্যবসায়ী হিসাবে আপনার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে নিজের প্রফিট মার্জিন ঠিক করার। আপনি যেভাবে চান তা ঠিক করতে পারেন। আর যেহেতু রিসেল প্রোডাক্টের দাম কম হয়ে থাকে। তাই আপনার ঠিক কতটা মার্জিন রাখলে ব্যাবসায় লাভ হবে তা নিজেই ঠিক করতে পারবেন। 

আপনার প্রফিট মার্জিন যত বেশি রাখবেন আপনার মুনাফা ততোই বেশি হবে। কিন্তু অবশ্যই তা মার্কেট প্রাইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url