ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
বর্তমান সময়ে যারা ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করতে চান। তাদের মনের ভিতর একটা কমন প্রশ্ন বার বার ঘুরপাক খায় যে, ফেসবুক কত ভিউতে কত টাকা দেয় (How much does Facebook pay for views)। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ফেসবুক ১০০ ভিউতে কত টাকা দেয়, এক মিলিয়ন ভিউ কত টাকা দেয়।
![]() |
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা |
এসব পরিষ্কার করে বোঝানোর চেষ্টা করব। এজন্য আপনাদের কাছে আমি আগে থেকে বলে রাখি। ফেসবুক কতো ভিউতে কত টাকা দেয় আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ সহকারে পড়বেন।
তাহলে আপনারা ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাকঃ
ফেসবুক কেন টাকা দেয়?
ফেসবুক কত ভিউতে কত টাকা দেয় এটি জানার আগে আমাদের অবশ্যই জানা উচিত ফেসবুক কেন টাকা দেয়। আমি এখন পরিষ্কার ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করব। আপনি যখন ফেসবুকে ভিডিও দেখেন তখন খেয়াল করলে দেখবেন অনেক ভিডিওতে ভিডিওর মাঝখানে অ্যাড (Advertisement) আসে।সাধারণত আমরা যারা বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকে ভিডিও দেখি। ঠিক সে সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির অ্যাড আমাদের ভিডিওতে ফেসবুক কোম্পানি দেখায়। এসব অ্যাড ফেসবুক ভিডিওতে দেখানোর জন্য যেসব কোম্পানির অ্যাড আমরা ভিডিওতে দেখে থাকি।
সেই কোম্পানি ফেসবুককে টাকা দেয় তাদের ফেসবুক কোম্পানির ভিডিওতে অ্যাড দেখানোর জন্য। আর এই অ্যাড যার ভিডিওতে দেখায় ফেসবুক কোম্পানি তাকে ডলার দিয়ে থাকে। ফেসবুক কোম্পানি এই অ্যাড মূলত সবার ভিডিওতে দেখাবে না।
শুধুমাত্র মনিটাইজেশন (Facebook Monetarization) যেসব পেজে রয়েছে। সেই সব পেজ গুলোতে এই অ্যাড গুলো দেখাবে। এবং তার মাধ্যমেই সেই ভিডিওর মালিক টাকা পাবে।
ফেসবুক মনিটাইজেশনের জন্য শর্ত?
ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য ফেসবুকের কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। তবেই ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়া সম্ভব হবে। আপনার পেজে সকল কিছু ঠিকঠাক থাকলে আবেদন করার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মনিটাইজেশন এনাবল করে দেবে।ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য নিচের শর্তগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। যেমনঃ
- ফেসবুক পেজ হতে হবে।
- কমপক্ষে ০৫টি ভিডিও থাকতে হবে।
- ফেসবুক পেজে ৫০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
- গত ৬০ দিনের মধ্যে ছয় লক্ষ মিনিট ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা?
ফেসবুক কত ভিউ কত টাকা দিয়ে থাকে। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অনেক কঠিন। কেননা একেক জন ব্যক্তি একেক পরিমাণ টাকা পেয়ে থাকে ফেসবুক থেকে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে থাকে ভিডিও কিওয়ার্ড এবং ভিডিও লোকেশন। আপনার ভিডিওটি যদি হাই সিপিসি (CPC) কিওয়ার্ড হয়।তাহলে কিন্তু আপনি অল্প ভিউতে ভাল পরিমাণ টাকা পাবেন। আবার অন্যদিকে আপনার ভিডিও যদি উন্নত দেশে ভিউ হয়। অর্থাৎ উন্নত দেশের মানুষ দেখে যেমন: আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, ইত্যাদি। তাহলে কিন্তু আপনার ভিডিওতে অল্প ভিউতে ভাল পরিমাণ টাকা পাবেন।
আর যদি আপনার ভিডিও বাংলাদেশ ও ভারতে বেশি ভিউ হয়। তাহলে কিন্তু আপনি বেশি ভিউতে যেমন বেশি টাকা পাবেন না। ঠিক তেমনি আপনি অল্প ভিউয়ে অল্প পরিমাণ টাকা পাবেন। বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারী অনেক বেশি হওয়ায়।
অনেক বেশি পরিমাণ ভিডিও ভাইরাল হয় ফেসবুকে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি ১,০০০ ভিউতে আপনি আট থেকে দশ টাকা পাবেন। তবে আপনার ভিডিও যদি মানুষ অনেক লম্বা সময় দেখে, তাহলে আপনার ইনকাম আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেননা লম্বা ভিডিও বেশি সময় ধরে দেখলে ভিডিওতে বেশি পরিমাণে অ্যাড আসে। আর যত বেশি অ্যাড আসবে আপনার তত বেশি ইনকাম হবে।
ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা?
অনেকেই আমাকে এই প্রশ্ন করে থাকেন যে, ফেসবুকে এক মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা। একটা ভিডিওতে এক মিলিয়ন ভিউ কিংবা তার হওয়া মানে অবশ্যই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে থাকবে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কিন্তু ইনকাম তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। এই নিয়মটি ইউটিউবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।ইউটিউবেও ভাইরাল ভিডিওতে ইনকাম বেশি হয়। আমরা যদি এক মিলিয়ন ভিউয়ের টাকা হিসাব করি। তাহলে ৭০ হাজার থেকে ১ এক লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। তবে আমি আগেই বলেছি যে ভাইরাল ভিডিওতে ইনকাম বেশি হয়ে থাকে। এটি আমি একটি আনুমানিক হিসাব আপনাদের সামনে পেশ করলাম।
কেন দেশ অনুযায়ী ইনকাম ভিন্ন হয়?
আমেরিকার কোম্পানিগুলো তাদের দেশে ফেসবুক ভিডিওতে অ্যাড দেখানোর জন্য যে ডলার দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের টাকার হিসাব অনুযায়ী সেটি বহু গুণ বেশি। যেহেতু আমেরিকার কোম্পানিগুলো তাদের দেশে ভিডিওতে অ্যাড দেখানোর জন্য বেশি টাকা দেয়। সেজন্যে যারা ভিডিও তৈরি করে আমেরিকা লক্ষ্য করে।তাদের ইনকামও অনেক বেশি হয়। বাংলাদেশ কিংবা ভারত আমাদের আশেপাশে দেশগুলোতে ফেসবুক ভিডিওতে অ্যাড দিতে ফেসবুক কোম্পানিকে বেশি টাকা দিতে হয় না। সেজন্য যারা এসব দেশ লক্ষ্য করে ভিডিও তৈরি করে তাদের ইনকামও খুব বেশি হয় না।
এজন্য আপনারা যারা অল্প ভিউতে বেশি টাকা ইনকাম করতে চান।তাদের উচিত উন্নত দেশ টার্গেট করে ভিডিও তৈরি করা। যেমন আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইতালি, ফ্রান্স ইত্যাদি।
আমরা যারা ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করি। আমাদের ক্ষেত্রেও কিন্তু ফেসবুুকের মত একই। উন্নত দেশ থেকে যদি ভিজিটর এসে আমাদের ওয়েবসাইটের অ্যাড দেখে এবং ক্লিক করে, তাহলে কিন্তু আমরা বেশি টাকা পেয়ে থাকি। এই নিয়মটি ফেসবুক এবং ইউটিউবে ঠিক একই ভাবে কাজ করে।
ফেসবুকে ইনকাম বৃদ্ধি করার উপায়?
এখন আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের কিছু টিপস দেব। যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে ফেসবুক থেকে ইনকাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। আমি আশাকরি নিচের টিপস গুলো আপনি যদি ফলো করেন। তাহলে অবশ্যই আপনার ফেসবুক পেজের ইনকাম বৃদ্ধি পাবে। যেমনঃআপনাকে অবশ্যই প্রথমে নিয়মিত রুটিন করে ভিডিও আপলোড করতে হবে।ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড, বা কোয়ালিটি দিন দিন বৃদ্ধি করতে হবে (চেষ্টা করতে হবে)। পেজের ফলোয়ার বৃদ্ধি করতে হবে। (সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকতে হবে, কমেন্টের রিপ্লাই দিতে হবে, চাইলে পেইড মার্কেটিং করতে পারেন)।
শেষ কথা, আমি আশাকরি ফেসবুক কত ভিউ কত টাকা আর্টিকেলটি আপনাদের ভাল লেগেছে। আমি এই আর্টিকেলটির মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এই সম্পর্কিত বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বুঝানোর জন্য।
আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পড়ে থাকেন। তাহলে আপনি এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে গেছেন। এখনও যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকে।
তাহলে দেরি না করে, নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত বা প্রশ্ন জানান। এছাড়াও আমাদের ওয়েবসাইটে অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত অনেক আর্টিকেল রয়েছে। আপনার যদি অনলাইন ইনকামে আগ্রহ থাকে।
তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের অনলাইন ইনকাম আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন। আর নিয়মিত এমন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url