অস্ট্রিয়া বেতন কত - অস্ট্রিয়া যাওয়ার উপায়

অস্ট্রিয়া ইউরোপের একটি দেশ। প্রবাসীদের অনেকের স্বপ্ন রয়েছে অস্ট্রিয়াতে কাজ করতে যাওয়ার। অস্ট্রিয়া তে কাজ করার অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যার কারণে অনেকেই অস্ট্রিয়া যেতে চান।
অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়া
আজকের পোস্টে অস্ট্রিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়, অস্ট্রিয়া যেতে কত টাকা লাগে অস্ট্রেলিয়াতে কাজের বেতন কত এই নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

অস্ট্রিয়া যাওয়ার উপায়?

পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়া অন্যতম। তাছাড়া এই দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একটি দেশ। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে কর্মী এসে থাকেন। কেননা অস্ট্রিয়াতে রয়েছে উন্নত জীবন ধারণের সুযোগ সুবিধা ও কাজের নিরাপত্তা। কিন্তু অনেকেই অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা কিভাবে করতে হয়।

অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা আবেদন?

অস্ট্রিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে কোন এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে করতে হবে। এম্বাসির মাধ্যমে খুব সহজেই অস্ট্রিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। অস্ট্রিয়া ভিসার জন্য যদি এজেন্সীর মাধ্যমে আবেদন করেন তাহলে তাদেরকে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। 

কেননা ভিসা আবেদনের সময় এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো দরকার পড়বে। এই ডকুমেন্টগুলোর মধ্য থেকে যদি কোন ডকুমেন্ট না থাকে তাহলে অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা আবেদনটি বাতিল হতে পারে। নিচে অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলোঃ
  • অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা পেতে একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ফটোকপি থাকতে হবে।
  • অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য বীমা থাকা লাগবে।
  • আবেদনকারী ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
যারা অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার মাধ্যমে যেতে চান তাদের অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো লাগবে। এই ডকুমেন্টগুলো অস্ট্রিয়া কনস্যুলেটর মাধ্যমে আপনারা জমা দিতে পারেন। তাছাড়া এই ডকুমেন্টগুলো ব্যতীত আর যদি অন্য কোন ডকুমেন্ট লাগে সেগুলো আপনারা সেখান থেকে জেনে নিতে পারবেন।

অস্ট্রিয়া যেতে কত টাকা লাগে?

অস্ট্রিয়া যেতে কত টাকা লাগে অবশ্যই অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা করার আগে এই বিষয়ে জেনে নিতে হবে। বর্তমানে অস্ট্রিয়া যেতে আট থেকে ১২ লক্ষ টাকার মত খরচ হচ্ছে। যে এজেন্সির মাধ্যমে অস্ট্রিয়া যাবেন সেখান থেকেই এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।

তাছাড়া কেউ যদি অস্ট্রিয়া থেকে আপনাকে কাজের ভিসা দিয়ে থাকেন তাহলে খরচের পরিমাণটা কম হবে এবং কত টাকা হবে তার মাধ্যমে জানতে পারবেন। তবে কেউ যদি দালালের মাধ্যমে অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা করতে চান তাহলে তার খরচের পরিমাণ ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা হতে পারে। তবে দালালের হাত দিয়ে কাজের ভিসা করার অনেক সমস্যা রয়েছে তাই সেই পথে না গিয়ে কনসুলেট অথবা কোন এজেন্সির মাধ্যমে করতে হবে।

অস্ট্রিয়াতে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

অস্ট্রিয়া যাওয়ার আগে সেখানে কোন কাজের চাহিদা বেশি অবশ্যই এই বিষয়ে কিছুটা ধারণা থাকতে হবে। তাহলে সেখানে গিয়ে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই কাজ করা যাবে। অস্ট্রিয়াতে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট এর কাজের জন্য প্রচুর সংখ্যক কর্মী নেওয়া হয়ে থাকে। 

তাছাড়া সেখানে ড্রাইভিং, পরিছন্নতা কর্মী ও ইলেকট্রনিক কাজের জন্য লোক নেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া অস্ট্রিয়াতে যারা পাইপ ফিটিংয়ের কাজ করে থাকেন তাদের অনেক চাহিদা রয়েছে।

অস্ট্রিয়া গিয়ে বাঙালিরা কি কি কাজ করে থাকে?

অস্ট্রিয়া উচ্চ অর্থনীতির একটি দেশ হওয়ায় সেখানে অনেক বাঙালি কাজের উদ্দেশ্যে যেয়ে থাকেন। সেখানে বাংলাদেশী কর্মীরা যে সকল কাজ করে থাকে তার তালিকা নিচে তুলে ধরা হলঃ
  • ড্রাইভিং এর কাজ করে থাকেন।
  • ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করে থাকেন।
  • লেবার ও কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন।
  • পরিছন্নতা কর্মী, মেকানিক্যাল ও হোটেলের কাজ করে থাকেন।
বাঙালিরা যারা অস্ট্রিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যান তারা সাধারণত এই ধরনের কাজগুলো বেশি করে থাকেন।

অস্ট্রিয়াতে কাজের বেতন কত?

ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় অস্ট্রিয়াতে কাজের বেতন তেমন বেশি না। অনেকেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য অস্ট্রিয়া ব্যবহার করে থাকেন। যারা অস্ট্রিয়াতে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন তারা ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা প্রতি মাসে বেতন পেয়ে থাকেন। 

যারা অস্ট্রিয়াতে বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। অস্ট্রিয়াতে  ড্রাইভিং কাজ যারা করেন তাদের বেতন মাসে এক লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মধ্যে। সব থেকে বেতন পেয়ে থাকেন অস্ট্রিয়াতে যারা আইটি খাতে কাজ করে থাকেন। আইটি খাতে কর্মরত কর্মীদের বেতন মাসে ১ লক্ষ টাকা থেকে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?

অনেকের প্রশ্ন রয়েছে অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগবে পারে। অস্ট্রিয়া কাজের ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় সাধারণত চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। কোন কারনে যদি ভিসা প্রক্রিয়াকরণে দেরি হয়ে যায় তাহলে দূতাবাসের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন। 

অস্ট্রিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সাধারণত দুই বছর স্থায়ী হয়ে থাকে। এই সময়কালের মধ্যে আপনারা চাইলে অস্ট্রিয়াতে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারবেন।

অস্ট্রিয়া যাওয়ার আগে কিছু সচেতনতা টিপস? 

বৈধভাবে অস্ট্রিয়া যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয়সমূহ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এই বিষয়ে কিছু মূল্যবান কথা নিচে উল্লেখ করা হলঃ
  • কাউকে সরাসরি টাকা দিয়ে অস্ট্রিয়াতে কাজ করার জন্য কোন ভাবেই যাবেন না।
  • অস্ট্রিয়া যাবার পর অন্য কোন দেশে যাওয়ার সুযোগ পেলে চলে যাবেন।
  • অস্ট্রিয়া যাওয়ার আগে অবশ্যই নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষ হয়ে তারপর অবশ্যই নিয়োগকালীন সময়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

অস্ট্রিয়া স্থায়ী হওয়ার উপায়?

অনেকে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়াতে স্থায়ী হওয়ার জন্য অনেক অবলম্বন করে থাকেন। দালাল ধরে তার মাধ্যমে টাকা দিয়ে অস্ট্রিয়াতে স্থায়ী হতে চান। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না দালাল ধরে কাজ করলে অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন পড়ে থাকে এবং এই টাকা দিয়েও যে কাজ হবে এর কোন গ্যারান্টি নাই।

তাছাড়া দালাল ধরে কাজ করা অবৈধ তাই এই উপায়টি অবলম্বন না করাই ভালো। আপনি যদি অস্ট্রিয়াতে দীর্ঘদিন ধরে একটি ভাল চাকরি করে থাকেন এবং সেখানে মাসিক ৪০ হাজার টাকার উপরে বেতন পেয়ে থাকেন ও এইভাবে যদি নিয়মিত পাঁচ ছয় বছর কাজ চালিয়ে যান তাহলে সেখানে আপনার একটি রেকর্ড তৈরি হবে।

অস্ট্রিয়াতে যখন রেকর্ড তৈরি হবে পরবর্তীতে আপনার সেখানে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ আসবে। তাই এখানে বিনা খরচ এই অস্ট্রিয়াতে স্থায়ী হওয়া যাচ্ছে তাই দালাল ধরে কাজ করানোর কোন যুক্তি আসে না।

অস্ট্রিয়ার মুদ্রার নাম কি?

অস্ট্রিয়ার মুদ্রার নাম কি বা অস্ট্রিয়া টাকার মান কত এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না। অস্ট্রিয়া মুদ্রার নাম হলো ইউরো। অস্ট্রিয়া এক ইউরো সমান বাংলাদেশি ১১৭ টাকার কাছাকাছি। অস্ট্রিয়া ১০০ ইউরো সমান বাংলাদেশি ১১৭৪৪ টাকার মত হয়।

বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া যেতে কত সময় লাগে?

অস্ট্রিয়ার রাজধানীর নাম হলো ভিয়েনা। বাংলাদেশ থেকে যদি সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকা থেকে ভিয়েনা যেতে হয় তাহলে সময় লাগবে ১২ ঘণ্টার মতো। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভিয়েনা যাওয়ার জন্য সবথেকে জনপ্রিয় যে ফ্লাইটটি রয়েছে সেটি হচ্ছে ঢাকা- দুবাই- ভিয়েনা। এই ফ্লাইটের মাধ্যমে গেলে ১১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মতো সময় লেগে থাকে।

শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা অস্ট্রিয়া যাওয়ার উপায় ও অস্ট্রিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। 

তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url