কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত - কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে

কম্বোডিয়া এশিয়া মহাদেশের একটি দেশ। অনেক প্রবাসী কাজের উদ্দেশ্যে কম্বোডিয়া যেয়ে থাকেন। কম্বোডিয়া দেশটির আয়তন ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৩৫ বর্গ কিলোমিটার। কম্বোডিয়াতে কাজের ভিসায় গিয়ে অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়।
কম্বোডিয়া
কম্বোডিয়া
তবে অনেকেই কম্বোডিয়া ভিসা প্রসেসিং কিভাবে করতে হয় ও কম্বোডিয়া ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানেন না। কম্বোডিয়া যেতে হলে অবশ্যই একটি বৈধ ভিসা লাগবে। এই বৈধ ভিসা আপনাদেরকে এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে নিতে হবে। 

আজকের পোস্টে কম্বোডিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়, কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে ও কম্বোডিয়া কাজের বেতন কত এই নিয়ে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

কম্বোডিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়?

বর্তমানে কম্বোডিয়া গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গুলোতে ওয়ার্কার কর্মী নিয়োগ চলছে। বাংলাদেশে অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা গার্মেন্টস ভিসা দিয়ে অনেক কর্মীকে কম্বোডিয়া পাঠাচ্ছেন। এজেন্সির মাধ্যমে কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খুবই অল্প খরচে পেয়ে যাবেন।

বিশেষ করে নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ ব্যক্তিরা কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন। কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অথবা বাংলাদেশের স্বীকৃত অনেক এজেন্সি রয়েছে তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে কম্বোডিয়ায় যাওয়া যাবে। 

তাছাড়া কম্বোডিয়া কনস্যুলেটে সরাসরি যোগাযোগ করে কাজের ভিসা নেওয়া যাবে। কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। এই ডকুমেন্টগুলো জমা দিয়ে কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। 

নিম্নে কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলঃ

কম্বোডিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র?

কম্বোডিয়া ভিসার জন্য যে পদ্ধতিতে আবেদন করুন না কেন অবশ্যই কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। যেমনঃ
  • কম্বোডিয়া যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে এবং পাসপোর্ট এর মেয়াদ ছয় মাসের বেশি থাকতে হবে।
  • ভিসা আবেদনকৃত ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড ও জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ফটোকপি লাগবে।
  • করোনা টিকা কার্ড এর প্রয়োজন হবে কম্বোডিয়া যাওয়ার জন্য।কম্বোডিয়া যাওয়ার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট লাগবে।
  • ভিসা আবেদনকৃত ব্যক্তির ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি লাগবে।
  • কম্বোডিয়া যাওয়ার জন্য হেলথ ইন্সুরেন্স লাগবে।
  • কম্বোডিয়াতে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো লাগবে।
তারপরেও যদি অতিরিক্ত কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে এজেন্সি বা এম্বাসির মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে পরবর্তীতে সেই ডকুমেন্টগুলো আপনারা ভিসা আবেদনের সময় সাবমিট করতে পারবেন।

কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে | কম্বোডিয়া ভিসার দাম কত

কম্বোডিয়া ভিসা খরচ নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরির উপর। অর্থাৎ আপনি কোন ধরনের ভিসা নিয়ে কম্বোডিয়া যাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে যারা কম্বোডিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাই তাদের ৪ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো খরচ আসতে পারে। 

এই খরচটা সাধারণত আপনি কোন এজেন্সির মাধ্যমে করলে খুব সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে যদি দালালের হাত ধরে কম্বোডিয়া যেতে চান তাহলে এই ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণটা ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে পারে। 

কম্বোডিয়াতে যদি কোন আত্মীয়-স্বজন থেকে থাকে এবং তার মাধ্যমে যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন তাহলে দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার মধ্যে কম্বোডিয়া যেতে পারবেন।

কম্বোডিয়াতে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

কম্বোডিয়াতে বর্তমানে কনস্ট্রাকশন কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কম্বোডিয়াতে কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য লোক নেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া কম্বোডিয়াতে আরো সাটারিং কার্পেন্টার, স্টিল পিকচার, ইলেকট্রিশিয়ান, ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন খাতের উপর লোক নেওয়া হয়ে থাকে। 

কম্বোডিয়াতে গার্মেন্টস কর্মী, ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার, ক্লিয়ারিং ম্যান, এগ্রিকালচার, সিকিউরিটি গার্ড, ডাক্তার, কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ড্রাইভিং, রান্নার কাজ সহ আরো অনেক খাতে লোক নেওয়া হয়। অর্থাৎ এই কাজগুলোর বিষয়ে যদি আপনার দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে খুব সহজে কম্বোডিয়াতে গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করতে পারবেন ও অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন।

কম্বোডিয়া কাজের বেতন কত?

কম্বোডিয়াতে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদেরকে অবশ্যই কম্বোডিয়া কাজের বেতন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। যারা কম্বোডিয়াতে কাজ করে থাকেন তারা প্রতি মাসে ন্যূনতম ৩০০ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন।

অর্থাৎ কম্বোডিয়াতে ওয়ার্কারদের সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশি টাকায় ৩০ হাজার টাকার উপরে। কম্বোডিয়াতে দক্ষতা সম্পন্ন যে সকল কর্মী কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৫০০ থেকে ৭০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। 

তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন কম্বোডিয়াতে কাজের অভিজ্ঞতা যত বাড়বে কর্মীর বেতনের পরিমাণ তেমন বাড়বে। কম্বোডিয়াতে যারা কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত বেতন পান। 

কম্বোডিয়াতে সবথেকে বেশি বেতন দেওয়া হয়ে থাকে ইঞ্জিনিয়ারদের। কম্বোডিয়াতে ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ১৫০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া যারা ড্রাইভিং কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৬০০ থেকে ৭০০ ডলারের উপরে বেতন পেয়ে থাকেন।

কম্বোডিয়া থাকার খরচ কত হয়ে থাকে?

যারা বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়াতে কাজ করার উদ্দেশ্যে যাই তাদের অবশ্যই কম্বোডিয়াতে খরচ কত এই বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। যারা কম্বোডিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাজ করে থাকেন তাদের থাকা-খাওয়া সহজ ৬০ থেকে ৮০ ডলারের মত খরচ আসতে পারে। 

তবে আপনি যদি অনেক ভালোভাবে থাকতে চান তাহলে খরচের পরিমাণটা ১০০ ডলারের উপরে চলে যেতে পারে। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তির উপর নির্ভর করে যে ব্যক্তির চাহিদা কি রকম।

কম্বোডিয়া মুদ্রার নাম কি | কম্বোডিয়া টাকার মান কত

কম্বোডিয়াতে মুদ্রাকে রিয়াল বলা হয়ে থাকে। কম্বোডিয়ার ১০০ রিয়াল সমান বাংলাদেশি ২.৬৭ টাকা।কম্বোডিয়ার এক হাজার রিয়াল সমান বাংলাদেশী ২৬.৭১ টাকার কাছাকাছি।
 
শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে কম্বোডিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় ও কম্বোডিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা কম্বোডিয়া ভিসা সম্পর্কিত কোন বিষয়ে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে।

তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আপনার মূল্যবান প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url