লাটভিয়া কাজের ভিসা - লাটভিয়া যেতে কত টাকা লাগে

লাটাভিয়া ইউরোপ মহাদেশের খুবই উন্নত একটি দেশ। লাটাভিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অনেকে আবেদন করে থাকেন। লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সেখানে ভালো কাজের বেতন পাওয়ার পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়।
লাটভিয়া
লাটভিয়া
তাই লাটাভিয়া যাওয়ার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। আজকের পোস্টে লাটাভিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়, লাটাভিয়া যেতে কত টাকা লাগে ও লাটাভিয়াতে কাজের বেতন কত? এই নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

লাটাভিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়?

লাটাভিয়াতে কাজের জন্য লোক নিয়োগ নিলে লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। বর্তমানে লাটাভিয়াতে কয়েক ধরনের ভিসা সার্ভিস চালু রয়েছে। এই তিন ধরনের ভিসার মধ্য থেকে যেকোন এক ধরনের ভিসার মাধ্যমে খুব সহজেই লাটাভিয়া যাওয়া যাবে। লাটাভিয়া যাওয়ার জন্য নিম্নের ভিসা গুলো দেওয়া হয়ে থাকেঃ
  • লাটাভিয়া টুরিস্ট ভিসা
  • লাটাভিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
  • লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

লাটাভিয়া টুরিস্ট ভিসা?

লাটাভিয়াতে যারা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান তারা লাটাভিয়া টুরিস্ট ভিসা করতে পারেন। লাটাভিয়া টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে খুব সহজেই ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণ করা যাবে। সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবছর প্রচুর সংখ্যক লোক লাটাভিয়া টুরিস্ট ভিসা নিয়ে লাটাভিয়া যেয়ে থাকেন।

লাটাভিয়া স্টুডেন্ট ভিসা?

লাটাভিয়াতে যারা পড়াশোনার জন্য যাই তাদেরকে লাটাভিয়া স্টুডেন্ট ভিসা নিতে হয়। লাটাভিয়া স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে সেখানে দীর্ঘ কিছুদিন পড়াশোনার জন্য অতিবাহিত করা যাবে। লাটাভিয়াতে পড়াশোনার পাশাপাশি স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে কাজ করতে পারবেন।

লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা?

লাটাভিয়াতে কিছু সময় কাজের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এই সকল কর্মীগণ লাটাভিয়াতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। তারপরে তাদেরকে আবার দেশে চলে আসতে হয়। 

এই ধরনের ভিসা গুলোকে সাধারণত লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলা হয়ে থাকে। লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কে অনেকেই লাটাভিয়া কাজের ভিসা হিসেবেও চিনে থাকেন।

লাটাভিয়া যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

লাটাভিয়া যেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। নিচে লাটাভিয়া যাওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলোঃ
  • এন আই ডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
  • ছয় মাস মেয়েদের একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট লাগবে।
  • বিমানের টিকিটের ফটোকপি লাগবে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্টের ফটোকপি লাগবে।
  • চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সনদ প্রয়োজন হবে।
  • অন্যান্য দেশে ট্রাভেল করেছেন কিনা তার প্রমাণ পত্র লাগবে।
যারা লাটাভিয়াতে কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে চান তাদের অবশ্যই এই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে। তবে আরও যদি কিছু ডকুমেন্ট লাগে সেগুলো আপনারা ভিসা আবেদন যেখান থেকে করবেন সেখান থেকে জেনে নিতে পারেন।

লাটাভিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া?

যারা লাটাভিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তারা খুব সহজেই জার্মান এম্বাসি অথবা চায়না এম্বাসির মাধ্যমে করতে পারেন। এই এম্বাসি গুলোর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন ডকুমেন্ট জমা দিয়ে খুব সহজেই লাটাভিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

বর্তমানে বাংলাদেশে লাটাভিয়ার কোন অ্যাম্বাসি না থাকায় আপনারা জার্মান ও চায়না এম্বাসীর মাধ্যমে খুব সহজেই আবেদন করতে পারেন। তারা কিছু কাগজপত্র জমা নেবে তারপরে সব ঠিকঠাক পেলে ভিসা প্রদান করবে।

লাটাভিয়াতে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

লাটাভিয়াতে বর্তমানে কৃষি কাজ ও কনস্ট্রাকশনের কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই কাজগুলোর জন্য লাটাভিয়াতে প্রচুর পরিমাণে দক্ষ শ্রমিক লাগে। তাছাড়া লাটাভিয়াতে অনেক কর্মী বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরি বা কোম্পানিতে কাজ করে থাকেন। ইলেকট্রনিক বা আইটি খাতেও লাটাভিয়াতে কাজের চাহিদা রয়েছে। 

তাই যদি লাটাভিয়া যেতে চান তাহলে এই কাজগুলো শিখে দক্ষ হয়ে তারপরে যেতে পারেন তাহলে মূল্যায়ন অনেক বেশি থাকবে। তাছাড়া লাটাভিয়াতে গিয়ে কাজ করার পাশাপাশি ইউরোপের অন্যান্য আরো অনেক দেশ রয়েছে সেখানে এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারেন। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে অসংখ্য কর্মী এই পদ্ধতিতে লাটাভিয়া থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

লাটাভিয়াতে কাজের বেতন কত?

লাটাভিয়াতে কাজের বেতন কত এই নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। লাটাভিয়াতে যারা কনস্ট্রাকশন ও বিভিন্ন ধরনের কোম্পানিতে কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৭০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। তাছাড়া লাটাভিয়াতে যারা ড্রাইভিং কাজ করে থাকেন তারা মাসে এক থেকে দুই লাখ বেতন পেয়ে থাকেন। 

তবে লাটাভিয়াতে আপনারা ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে যেমন সুযোগ-সুবিধা পাবেন তেমনটা পাবেন না। লাটাভিয়াতে প্রথম অবস্থায় কাজের ভিসা নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে লাটাভিয়ার মাধ্যমে ইউরোপের আরও উন্নত দেশে পাড়ি জমাতে পারেন। যেমন লাটাভিয়া থেকে ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশে যেতে পারেন। 

সেখানে গিয়ে আরো ভালো সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি অনেক বেশি বেতনে কাজ করতে পারবেন এবং নিজের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারবেন।

লাটভিয়া যেতে কত টাকা লাগে?

লাটাভিয়া যেতে কত টাকা লাগে বা লাটাভিয়া ভিসার দাম কত এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে।লাটাভিয়াতে যারা ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা নিয়ে যান এম্বাসির মাধ্যমে তাদের এক থেকে দুই লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে। 

যারা কোন এজেন্সির মাধ্যমে লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে লাটাভিয়া যেতে চান তাদের তিন থেকে চার লক্ষ টাকা খরচ আসতে পারে। আর যারা লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে লাটা দিয়া যেতে চান তাদের ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।

লাটাভিয়া মুদ্রার নাম কি?

লাটাভিয়াতে সাধারণত ইউরো দিয়ে লেনদেন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে লাটাভিয়ার এক টাকা সমান বাংলাদেশি ১২৮.৫০ টাকা। লাটাভিয়ার এক হাজার ইউরো সমান বাংলাদেশি  এক লক্ষ আঠারো হাজার পাঁচশো টাকার কাছাকাছি।

শেষ কথা, আশা করি পোস্টটি যারা বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা লাটাভিয়া কাজের ভিসা বা লাটাভিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিভাবে পাবেন এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে গিয়েছে। তারপরেও যদি এই বিষয়ে কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url