তুরস্ক কাজের বেতন - তুরস্ক যেতে কত টাকা লাগে

তুরস্ক যাওয়ার উপায় বা তুরস্ক কাজের ভিসা নিয়ে অনেকেই তুরস্ক যেতে চাই। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে তুরস্কের ভিসা আবেদন কিভাবে করবেন ও তুরস্ক ভিসা কিভাবে পাবেন এই নিয়ে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। তাছাড়া যারা তুরস্ক তে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের অবশ্যই জানতে হবে তুরস্ক কাজের বেতন কত, তুরস্কের কোন কাজের চাহিদা কেমন, বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক বিমান ভাড়া কত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে।
তুরস্ক
তুরস্ক
তুরস্ক খুবই সুন্দর একটি দেশ। সৌদি আরব সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে অনেকেই তুরস্কতে কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন। কেননা তুরস্ক থেকে খুব সহজেই ইউরোপের দেশগুলোতে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া যায়। তুরস্ক থেকে একবার যদি ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়া যায় তাহলে সেখানে অনেক বেশি বেতনে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

তাছাড়া তুরস্ক অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক শান্তিপ্রিয় দেশ হওয়ায় অনেকেই তুরস্ক যেতে চাই। নিম্নে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক যাওয়ার উপায়, তুরস্ক কাজের ভিসা কিভাবে পাবেন ও তুরস্ক যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

তুরস্ক যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায়। তুরস্ক কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে এবং কিছু যোগ্যতা থাকা লাগবে। তুরস্ক যাওয়ার জন্য এই সকল ডকুমেন্টগুলো কোন এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে জমা দিতে হবে। 

বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ লোকই তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে যায়। তবে আজকের পোস্টে শুধুমাত্র তুরস্ক কাজের ভিসা নিয়েই আলোচনা করা হবে। তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্রটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। 

অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হলে অবশ্যই সর্বপ্রথম ভিসা ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। ফর্মটি ডাউনলোড করা হয়ে গেলে সুন্দরভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে তুরস্ক এম্বাসিতে জমা দিতে হবে। 

ভিসা আবেদন করার সময় কিছু চার্জ লাগবে সেটা এম্বাসির মাধ্যমেই জেনে নিতে পারবেন।আর যদি এজেন্সির মাধ্যমে করেন তাহলে ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে সবকিছুর দায়ভার তারাই নিয়ে নিবে।

তুরস্কে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

তুরস্কে যাওয়ার আগে অবশ্যই তুরস্কে কোন কাজের চাহিদা বেশি বা তুরস্কের বর্তমানে বাঙালিরা কি কাজ করছে এই বিষয়ে ধারণা নিতে হবে। তুরস্কে বর্তমানে বাঙালিরা কৃষিকাজসহ অনেকে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন। 

তাছাড়া তুরস্কে কাজের ভিসা নিয়ে গিয়ে অনেকেই রেস্টুরেন্ট কর্মী, হোটেল বয়, মাদ্রাসা মসজিদ কেন্দ্রিক সহ অনেক স্থানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তাছাড়া অনেক বাঙালি রয়েছে যারা তুরস্কতে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গেম ডেভেলপমেন্ট সহ অন্যান্য আইটি খাতে কাজ করে থাকেন। 

তুরস্কে অনেকেই পাইপ ফিটার, টাইলসের কাজ সহ আরো অনেক ধরনের কাজ করে থাকেন প্রবাসী বাঙ্গালীরা। তাই এই কাজগুলোর বিষয়ে যদি দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে দেরি না করে তুরস্কের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে করে নিতে পারেন এবং তুরস্কে গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করতে পারেন।

তুরস্ক কাজের বেতন কত?

তুরস্কে যাওয়ার আগে অবশ্যই তুরস্কে কোন কাজের বেতন বেশি বা তুরস্ক তে বাঙালি কর্মীরা কত টাকা বেতন পেয়ে থাকে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। তুরস্কে কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত অনেকেই জানেন না। তুরস্কে কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। 

অভিজ্ঞতা বাড়ার পাশাপাশি এক্ষেত্রে বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তুরস্কে যারা কৃষি কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার উপরে বেতন পেয়ে থাকেন। তুরস্কে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মীরা মাসে ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার মত বেতন পান। 

তুরস্কের সবথেকে বেশি বেতন দেওয়া হয়ে থাকে যারা আইটি খাতে কাজ করে থাকেন। তুরস্কে সফটওয়্যার ডেভলপার মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন। যা সাধারণত বাংলাদেশি টাকায় হিসেব করলে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার উপরে।

তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে | তুর্কি কাজের ভিসা

তুরস্ক কাজের ভিসাই যেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লাগবে। যদি এজেন্সির মাধ্যমে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন বা এম্বাসির মাধ্যমে করেন এই ডকুমেন্টগুলো সেখানে জমা দিতে হবে। যেমনঃ
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে।
  • ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
  • ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি লাগবে।
  • ভিসা আবেদন কপি লাগবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি লাগবে।
  • টিএন সার্টিফিকেট এর ফটোকপি লাগবে।
  • মেডিকেল রিপোর্টে উত্তীর্ণ হতে হবে ও তার ডকুমেন্ট লাগবে।
তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং এর জন্য এই ডকুমেন্টগুলোই সাধারণত প্রয়োজন হয়ে থাকে। তারপরেও যদি বাড়তি কোন ডকুমেন্ট লাগে তাহলে এম্বাসি অথবা এজেন্সির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে পরবর্তীতে আপনারা ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে জমা দিতে পারবেন।

তুরস্কে সর্বনিম্ন বেতন কত?

তুরস্কের কাজের সর্বনিম্ন বেতন ২৫০ ডলার। অর্থাৎ যারা তুরস্কতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাবেন তাদের কাজের বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রথম পর্যায়ে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। পরবর্তীতে অভিজ্ঞতা বাড়ার পাশাপাশি বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

তুরস্ক যেতে কত টাকা লাগে | তুরস্ক কাজের ভিসার দাম কত

তুরস্ক কাজের ভিসা নিয়ে যেতে হলে কত টাকা খরচ হয়ে থাকে এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না যার কারণে প্রতারিত হয়ে থাকেন। বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ অনেক কম। তুরস্ক ভিসা যদি কোন এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে করে থাকেন। তাহলে তিন থেকে চার লক্ষ টাকার মত খরচ হয়ে থাকে। 

তবে যদি কেউ দালালের মাধ্যমে তুরস্ক ভিসা করতে চান তাহলে তার খরচের পরিমাণ ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার কাছাকাছি যেতে পারে। তবে তুরস্কে যদি কোন আত্মীয় স্বজন থেকে থাকে তাহলে সে যদি ভিসা পাঠায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার মধ্যেই তুরস্ক চলে যাওয়া যাবে। আশা করি ইতিমধ্যে তুরস্ক ভিসার দাম কত এই বিষয়ে সঠিক ধারণাটা পেয়ে গিয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে তুরস্কের বিমান ভাড়া কত?

বাংলাদেশ থেকে তুরস্কের বিমান ভাড়া অনেকটাই কম। বাংলাদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে সরাসরি তুরস্কের ইস্তানবুলে গেলে খরচ আসতে পারে ৪০ হাজার থেকে ৫২ হাজার টাকার মধ্যে। তবে কেউ যদি কয়েক মাস আগে বা কয়েক দিন আগে আগাম টিকিট কেটে রাখেন তাহলে তার খরচের পরিমাণ অনেক বেশি হবে।

তুরস্ক যেতে কত বছর বয়স লাগে?

তুরস্কতে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের সর্বনিম্ন বয়স ২১ এবং সর্বোচ্চ বয়স ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে টুরিস্ট ভিসায় যেতে বয়সের তেমন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে তুরস্কতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেতে হলে অবশ্যই একুশ থেকে পঞ্চাশ বছরের মধ্যে বয়স হতে হবে।

তুরস্ক এম্বাসি বাংলাদেশ ঠিকানা?

বাংলাদেশে তুরস্ক এম্বাসি রয়েছে যার মাধ্যমে খুব সহজেই তুরস্কের যাওয়ার জন্য যেকোনো ভিসা করা যায়। তবে অনেকেই তুরস্ক এম্বাসির ঠিকানা জানেন না যার কারণে অনেক ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। 

বাংলাদেশে অবস্থিত তুরস্ক এম্বাসির ঠিকানা হলো Address: 6, Madani Avenue, Baridhara Diplomatic Zone, Dhaka-1212।কেউ যদি সরাসরি কনস্যুলার ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলতে চান তাহলে +880 170 496 7948 এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।

তুরস্ক টাকার মান কত | তুরস্কের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

তুরস্কের টাকার মান কত বা তুরস্কের মুদ্রার নাম কি এই বিষয়েও ধারণা থাকা জরুরী। তুরস্কের মুদ্রাকে লীরা বলা হয়ে থাকে। তুরস্কের ১ টাকা সমান বাংলাদেশি চার টাকার সমান। তাহলে তুরস্কের এক হাজার টাকা সমান বাংলাদেশি ৪০৩৯ টাকার মতো এসে থাকে।

আমাদের শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা বিস্তারিত ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা তুরস্ক কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় ও তুরস্ক যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। 

তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url