নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে - নিউজিল্যান্ড ভিসা পাওয়ার উপায়

নিউজিল্যান্ড ওশেনিয়া মহাদেশের খুবই সুন্দর একটি দেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই দেশটিতে প্রতিবছর অসংখ্য লোক ট্যুরিস্ট  ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে এসে থাকেন। নিউজিল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। যার কারণে অনেকই ঝামেলার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।

নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড
আজকের পোস্টে নিউজিল্যান্ড ভিসা পাওয়ার উপায়, নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে ও নিউজিল্যান্ডে কাজের বেতন কত এই নিয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক

নিউজিল্যান্ড যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডে দুই ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজেই যাওয়া সম্ভব। নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও নিউজিল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা। নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও নিউজিল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা নেওয়ার জন্য কিছু শর্তাদি রয়েছে।

তবে আজকের পোস্টে শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসা নিয়ে আলোচনা করা হবে। নিম্নে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছেঃ

নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | নিউজিল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করে নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। অনেকেই এই পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই কাজের ভিসা পেয়ে থাকেন। যেমনঃ
  • জব ওয়েবসাইটে আবেদন করে
  • নিউজিল্যান্ডে বসবাসকৃত আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে
  • এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে

জব ওয়েবসাইটে আবেদন করে

আপনার ভিতরে যদি দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে নিউজিল্যান্ডের সরকারি জব ওয়েবসাইটে কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেখানে আপনারা অনেক ধরনের কাজ পেয়ে যাবেন। কাজের জন্য যদি সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন তাহলে তারা পরবর্তীতে আপনার কাছ থেকে একটি ভাইভা পরীক্ষা নিবে।

ভাইবা পরীক্ষায় যদি উত্তীর্ণ হতে পারেন এবং কিছু শর্তাদি যদি পূরণ করতে পারেন তাহলে নিউজিল্যান্ড থেকে আপনাকে কাজের ভিসা দেওয়া হবে। এই ওয়ার্ক পারমিটটি আপনারা সরাসরি এম্বাসিতে জমা দিয়ে ভিসা নিয়ে নিতে পারবেন।

আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে

নিউজিল্যান্ডের যদি আপনার কোন আত্মীয় স্বজন থেকে থাকে ও ভালো কোন কোম্পানিতে কাজ করে থাকে তাহলে সেই কোম্পানি থেকে লোক নিলে আত্মীয় আপনার জন্য ভিসা পাঠাতে পারবে। 

ভিসাটি এম্বাসিতে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আরো কিছু শর্তাদি পূরণ করে খুব সহজেই নিউজিল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আসা যাবে। এক্ষেত্রে খরচের পরিমাণটাও অনেক কম হবে।

এজেন্সি অথবা দূতাবাসের মাধ্যমে

বাংলাদেশে সরকারি স্বীকৃত অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা বিভিন্ন দেশে কাজের জন্য ভিসা দিয়ে থাকেন।এই সকল এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে ভিসা আবেদন করলে ভিসা প্রসেসিং এর সকল দায়িত্ব তারা নিয়ে নিবে। ভিসা প্রসেসিং শেষ হয়ে গেলে খুব সহজেই নিউজিল্যান্ডে গিয়ে কাজ করতে পারবেন। 

তবে এর জন্য এজেন্সিকে অর্থ প্রদান করতে হয়। তাছাড়া কেউ চাইলে সরাসরি নিউজিল্যান্ড এম্বাসির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

নিউজিল্যান্ড যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

নিউজিল্যান্ড ভিসা করার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লাগে। এই ডকুমেন্টগুলো ব্যতীত কেউ নিউজিল্যান্ড ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন নাঃ
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে এবং পাসপোর্টে অবশ্যই ছয় মাসের বেশি মেয়াদ থাকতে হবে।
  • ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম দরকার হবে।
  • ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তির ছবি লাগবে এবং ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে।
  • এন আই ডি কার্ড প্রয়োজন হবে।
  • মেডিকেল রিপোর্ট লাগবে ও টিকা কার্ড লাগবে।
তাছাড়া নিউজিল্যান্ড ভিসা করার জন্য অতিরিক্ত কিছু ডকুমেন্ট লাগলে আপনাকে এজেন্সি অথবা এমব্যাসির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে?

নিউজিল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে বা নিউজিল্যান্ড ভিসা খরচ কত এই বিষয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। আপনি যদি সরকারি জব সাইটের মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন এবং ভিসা পেয়ে থাকেন তাহলে এই ক্ষেত্রে তিন থেকে চার লক্ষ টাকার মতো খরচ আসবে। 

যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা নিয়ে থাকেন ৮ থেকে ১২লক্ষ টাকার মত খরচ আসবে।নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত কোন আত্মীয়-স্বজনের কাছে যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে থাকেন তাহলে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।

নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে সব থেকে বেশি খরচ হয়ে থাকে দালালের মাধ্যমে করলে। দালালের মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করলে  ১৪ থেকে ১৬ লাখ টাকা খরচ হয়।

নিউজিল্যান্ডে কাজের বেতন কত?

নিউজিল্যান্ডে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যান তাদের সর্বপ্রথম প্রশ্ন থাকে নিউজিল্যান্ডের কাজের বেতন কত টাকা দেওয়া হয়েছে। যারা নিউজিল্যান্ড কোম্পানির অধীনে কাজ করে থাকেন তাদেরকে সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ করা লাগে। সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা কাজ করলে তাদের প্রতি ঘন্টা হিসেবে ১০ থেকে ১৫ ডলার দেওয়া হয়ে থাকে। 

তাহলে ৭২০ ডলারের মত প্রতি সপ্তাহে যারা নিউজিল্যান্ডে কাজ করে থাকেন তারা আয় করে থাকেন। তাহলে মাসে ৩০০০ ডলারের কাছাকাছি বেতন চলে আসছে। যা সাধারণত বাংলাদেশী টাকায় হিসেব করলে ২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। 

এটাই হচ্ছে যারা প্রবাসী শ্রমিক রয়েছেন তাদের সর্বোচ্চ বেতন নিউজিল্যান্ডে। তবে প্রথম অবস্থায় যারা কাজ করেন তাদের ভেতর এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার মত হয়ে থাকে।

নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন বেতন কত?

নিউজিল্যান্ডে যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান তাদের অবশ্যই নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন বেতন কত এই বিষয়ে জানতে হবে। নিউজিল্যান্ডের যদি কাজের উদ্দেশ্যে কোন কোম্পানি বা ফ্যাক্টরিতে যে থাকেন তাহলে প্রথম অবস্থায় ঘন্টা প্রতি ৬ থেকে ৮ ডলার দেওয়া হবে। 

নিউজিল্যান্ডের সপ্তাহে কর্মীরা ৪৮ ঘণ্টা কাজ করে থাকেন। তাহলে প্রতি সপ্তাহে একজন নতুন শ্রমিক নিউজিল্যান্ড ১৪০০ ডলারের ওপরে আয় করার সুযোগ পাচ্ছে। যা বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে ৯০ হাজার টাকার উপরে আসে।

নিউজিল্যান্ড টাকার মান কত | নিউজিল্যান্ডের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

অনেকেই নিউজিল্যান্ডের টাকার মান কেমন এই বিষয়ে জানেন না। বাংলাদেশের মুদ্রাকে যেমন টাকা বলা হয় তেমনি নিউজিল্যান্ডের মুদ্রা কে ডলারে ধরা হয়। বর্তমানে নিউজিল্যান্ডের এক ডলার সমান বাংলাদেশি ৬৬.২৪ টাকার কাছাকাছি।

আমাদের শেষ কথা, নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া অনেক সহজ। দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকলে খুব সহজে এজেন্সি অথবা এম্বাসির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এখন পাওয়া যাচ্ছে। 

তারপরেও যদি নিউজিল্যান্ড ভিসা সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থেকে থাকে বা এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট সেকশন থেকে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url