স্পেন যেতে কত টাকা লাগে - স্পেন যাওয়ার সহজ উপায়

ইউরোপের দেশ স্পেন প্রবাসীদের অনেকের পছন্দের। বর্তমান সময়ে স্পেনে স্বাধীনভাবে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কারণে অনেক দেশ থেকেই স্পেনে কাজের জন্য লোক আসছে। তাছাড়া প্রবাসীরা অল্প সময়ের মধ্যেই স্পেনে নাগরিকত্ব পাওয়ার কারণে অনেকেই সেখানে কাজের জন্য অবস্থান করছেন।
স্পেন
স্পেন
স্পেনে কোন কর্মী দুই থেকে তিন বছর যদি বৈধভাবে বসবাস করে থাকে ও কাজকর্মে নিয়োজিত থেকে থাকে। তাহলে ছয় মাসের বৈধভাবে কাজ করার কাগজপত্র জমা দিয়ে খুব সহজে স্পেনে নাগরিকত্বর জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারপরে সেখানে নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করতে পারবেন ও বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন। 

আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন স্পেন যাওয়ার সহজ উপায়, স্পেন যেতে কত টাকা লাগে, ও স্পেন কাজের ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

স্পেন যাওয়ার সহজ উপায়?

বাংলাদেশ থেকে স্পেনে যাওয়া খুবই সহজ। কেননা বাংলাদেশের সরকার স্বীকৃত অনেক এজেন্সি রয়েছে যাদের মাধ্যমে খুব সহজেই স্পেন ভিসা নিয়ে যাওয়া যায়। তাছাড়া অনেকেই এমবাসির মাধ্যমে টুরিস্ট ভিসা অথবা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে স্পেনে পাড়ি জমিয়ে থাকেন। 

বাংলাদেশ থেকে যদি স্পেনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে চান তাহলে অবশ্যই দিল্লির এমব্যাসির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। কেননা বাংলাদেশ থেকে স্পেনে সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়া যাবে না ।

অনেকেই দালালের মাধ্যমে স্পেনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করে থাকেন। যার মাধ্যমে প্রতারণার সম্ভাবনা থাকে ও অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে থাকে। তাই স্পেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হলে অবশ্যই কোন এজেন্সি বা এম্বাসি থেকে নিতে হবে।

স্পেন যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?

স্পেন যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে।এই সকল কাগজপত্র গুলো ভিসা আবেদন করার সময় জমা দিতে হবে। বর্তমানে স্পেন যেতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে তার নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • স্পেনের আবেদন ফরম লাগবে
  • ৬ মাস মেয়াদী একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে
  • তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে
  • ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন হবে
  • স্পেন ভাষায় দক্ষ হতে হবে ও তার সার্টিফিকেট লাগবে
  • পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠায় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো তুলে ধরতে হবে
  • স্পেন ভিসা আবেদন ফরমের সাথে এই ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই লাগবে। এই ডকুমেন্টগুলোর মধ্য থেকে যদি কোন ডকুমেন্ট ভুল দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভিসা আবেদনটি বাতিল হতে পারে।

স্পেন যেতে কত টাকা লাগে | স্পেন  ভিসা খরচ কত

অনেকে স্পেন যেতে কত টাকা লাগে বা স্পেন ভিসা খরচ কত এই বিষয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। যারা স্পেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের খরচ আসতে পারে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকার মতো। অর্থাৎ বিমান ভাড়া সহ যাবতীয় সকল খরচ এই টাকার মধ্যে হয়ে যাবে। 

তবে যদি কোন দালালের মাধ্যমে স্পেন ভিসা করে থাকেন তাহলে খরচের পরিমাণটা আরো বেশি হতে পারে।তবে দালালের মাধ্যমে স্পেন ভিসা করলে পরবর্তীতে বড় ধরনের ঝামেলা ও ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। 

তাই সব থেকে ভালো হয় কোন এম্বাসি অথবা এজেন্সির মাধ্যমে স্পেন ভিসা করা। স্পেন থেকে আপনারা চাইলে পরবর্তীতে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও যেতে পারবেন।

স্পেনে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

স্পেনে যাওয়ার আগে অবশ্যই স্পেনে কোন কাজের চাহিদা বেশি বা স্পেনে গিয়ে বাঙালি কর্মীরা কি ধরনের কাজ করে থাকেন এই বিষয়ে অবশ্যই সর্বপ্রথম ধারণা নেওয়া জরুরী। তাহলে সেই রিলেটেড কাজগুলো বাংলাদেশ থেকেই করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব।

স্পেনে বাঙালি কর্মীরা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে, হোটেলে ও কোম্পানিতে কাজ করে থাকেন। রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে যে সকল কর্মীরা কাজ করে থাকেন তারা অনেক ধরনের সুযোগ-সবিধাও পেয়ে থাকেন। তাছাড়া অনেক বাঙালি স্পেনে ড্রাইভিং ভিসায় কাজ করে থাকেন ও ভালো বেতন পেয়ে থাকেন। 

আইটি খাতে দক্ষ কর্মীরা স্পেনে গিয়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন সহ ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়েও কাজ করতে পারেন।

স্পেনে কোন কাজের বেতন বেশি?

স্পেনে কাজের বেতন মূলত কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে থাকে। বাংলাদেশ থেকে যারা স্পেনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যায় তারা হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সহ বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে থাকেন। হোটেল ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকেন তারা বোনাস ও টিপস সহ প্রতিমাসে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকেন।

তাছাড়া যারা স্পেনে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে থাকেন তারা মাসে ২ লক্ষ টাকার উপরে বেতন পেয়ে থাকেন। স্পেনে ইলেকট্রনিক কর্মীরা মাসে চার লক্ষ টাকার উপরে বেতন পান। তবে স্পেনে সবথেকে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন যারা আইটি হাতে কাজ করে থাকেন। 

স্পেনে যারা আইটি খাতে কাজ করেন তারা প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার উপরে ইনকাম করে থাকেন। তবে স্পেনে কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ার পাশাপাশি বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

স্পেন ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?

স্পেন যাওয়ার আগে অবশ্যই স্পেনের টাকার মান সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।স্পেনের মুদ্রা কে ইউরো বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে স্পেনের এক টাকা বাংলাদেশের ১১৮ টাকার কাছাকাছি। স্পেনের ১০০০ টাকা সমান বাংলাদেশের ১,১৮০০০ টাকার উপরে।

স্পেন ভিসা প্রসেসিং?

এম্বাসির মাধ্যমে যদি স্পেন ভিসা প্রসেসিং করতে চান তাহলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার পাশাপাশি এম্বাসির ফি দিতে হবে। তারপরে তারা সবকিছু যাচাই-বাছাই করবে আর যাচাই-বাছাই করতে সাধারণত কয়েকদিন সময় লাগবে। স্পেন ভিসা প্রসেসিং হতে সাধারণত ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মত সময় লেগে থাকে।

শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে স্পেন কাজের ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিভাবে পাবেন এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি স্পেন ভিসা সম্পর্কিত বিষয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয়ে সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে।

তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আপনার মূল্যবান প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url