সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে - সুইডেনে বেতন কত

সুইডেন দক্ষিণ ইউরোপের সেনজেনভুক্ত একটি দেশ। সুইডেন দেশটিতে দুই কোটির উপরে মানুষ বসবাস করে থাকে। সুইডেন অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক উন্নত একটি দেশ হওয়ায় এই দেশটিতে কাজের অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকায় অনেকেই সুইডেন ভিসা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে থাকেন।
সুইডেন ভিসা
সুইডেন ভিসা
তাছাড়া সুইডেন দেশটির রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যার কারণে অনেকেই সুইডেন ভ্রমন করতে চান। আজকের পোস্টে সুইডেন ভিসা পাওয়ার উপায় ও সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে এই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

সুইডেন যাওয়ার উপায়?

সুইডেন বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও সুখী জাতির মধ্যে অন্যতম। সুইডেন দেশটির প্রায় ৯১% মানুষ শিক্ষিত। কেননা দেশটিতে শিক্ষাব্যবস্থা তাদের দেশের নাগরিকদের জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে। যার কারণে বিশ্বের অনেক দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা সুইডেনে পড়াশোনার জন্য যায়।সুইডেন দুই ধরনের ভিসা ব্যবহার করে খুব সহজেই যাওয়া যায়। (১) সুইডেন টুরিস্ট ভিসা (২) সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা।

সুইডেন টুরিস্ট ভিসা?

সুইডেন যেহেতু সেনজেনভুক্ত একটি দেশ তাই যে কোন সেনজেন ভিসার মাধ্যমে সুইডেন ভ্রমণ করা যাবে। সেনজেন ভিসা ব্যবহার করে সুইডেনে সর্বনিম্ন ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন। সুইডেন এম্বাসি থেকে সরাসরি টুরিস্ট ভিসা নিতে পারবেন এবং খুব সহজেই সুইডেন ভ্রমণ করতে পারবেন। 

বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত সুইডেন এম্বাসি থেকে সুইডেন টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসা ফি প্রদান করে আসতে হবে। তারপরে কিছুদিন যাচাই-বাছাই চলবে এবং সব প্রক্রিয়া যদি ঠিক থেকে থাকে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে ভিসা পেয়ে যাবেন এবং এই ভিসা ব্যবহার করে সুইডেন ভ্রমণ করতে পারবেন।

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা?

সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সেখানে স্থায়ী হওয়ার দারুন সুযোগ রয়েছে। যার কারণে অনেকেই সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান এবং সুইডেন যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে স্থায়ী হতে হলে অবশ্যই আপনাদের কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবেঃ
  • মাস্টার্স লেভেলের ৩০ ক্রেডিট সম্পূর্ণ করতে হবে।
  • সুইডেনে একটি স্থায়ী চাকরি পেতে হবে এবং যার মাসিক বেতন হতে হবে ১৩ হাজার ক্রোনোর।
  • কোন কারনে যদি মাসিক বেতন ১৩ হাজার ক্রোনোর নিচে হয় তাহলে সুইডেনে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ হারাবেন।

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার নিয়ম?

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলেঃ http://www.migrationsverket.se/English/Startpage.html এই ঠিকানায় গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। অনলাইনে সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে ফি প্রদান করতে হবে ১০০০ ক্রোন। 

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে সাথে আনা যাবে স্ত্রী ও ১৮ বছরের থেকে কম বয়সী সন্তানকে। সুইডেনের এই মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার মাধ্যমে আপনার পরিবারের যে কেউ চাইলে দেশে অনেকবার ভ্রমণ করতে পারবে। তাছাড়া আপনার পার্টনার হিসেবে যে যাবে পড়াশুনা করতে পারবে ও টিউশনি ফি প্রদান করা লাগবে না।

সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে?

বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে যাওয়া যাবে। স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সুইডেন যেতে হলে মোট খরচ আসতে পারে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। কেননা সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা করতেই এক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যাবে, তারপরে বিমান ভাড়া ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির ফি এবং অন্যান্য সকল খরচ মিলিয়ে সাত লক্ষ টাকার কাছাকাছি প্রায় চলে যাবে। 

তাছাড়া অনেকে এর থেকে কম খরচে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে পারেন কেননা এটা সাধারণত টিউশন ফি ও ইউনিভার্সিটি ফির ওপর নির্ভর করে থাকে।

সুইডেনে বেতন কত?

সুইডেন ইউরোপের খুবই উন্নত একটি দেশ। সুইডেনে স্বাক্ষরতার হার প্রায় ৯৯%। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে সুইডেনে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ ছাড়া কোনভাবেই কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। সুইডেনে সর্বনিম্ন বেতন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার কাছাকাছি।সুইডেনে যারা সবথেকে নরমাল কাজ করবে তারা এই বেতনে সুইডেনে কাজ করতে পারবেন। 

যারা সুইজারল্যান্ডে ড্রাইভিং ও রেস্টুরেন্টে কাজ করে থাকেন তারা সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন। তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে সুইডেনে প্লাম্বিং কাজের চাহিদা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। সুইডেনে যারা প্লাম্বিং এর কাজ করে থাকেন তারা মাসে তিন লক্ষ টাকার কাছাকাছি বেতন পেয়ে থাকেন। 

তাছাড়া সুইডেনে গ্লাস ফিটিং এর কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সুইডেনে যারা গ্লাস ফিটিং এর কাজ করে থাকেন তারা দুই লক্ষ টাকার কাছাকাছি বেতন পেয়ে থাকেন। তাছাড়া যদি কেউ মদের বারে কাজ করে থাকেন তাহলে তার বেতন হবে এক লক্ষ টাকার উপরে। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে সুইডেনে কাজের বেতন অনেক বেশি যার কারণে অনেকের সুইডেনে যাওয়ার আগ্রহ রয়েছে।

সুইডেনের  মুদ্রার নাম কি?

সুইডেনের মুদ্রা কে সুইডিস ভাষায় ক্রোনা বলা হয়ে থাকে। তাছাড়া অনেকেই পাউন্ড অপশন ও ডলার অপশন বলে থাকেন। এক সুইডিস ক্রোন  সমান বাংলাদেশের ৯ টাকার কাছাকাছি। তাহলে ১০০ সুইডিস ক্রোন সমান বাংলাদেশী ৯৯৮ টাকার কাছাকাছি।

শেষ কথা, আশাকরি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে সুইডেন কিভাবে যাওয়া যায় বা সুইডেন ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি সুইডেন ভিসা নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন কিছু বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url