ভুটান ভিসা খরচ কত - ভুটান যেতে কত টাকা লাগে

আমাদের খুব কাছে একটি শান্তিপ্রিয় ছোট দেশ ভুটান। ছোট-বড় পাহাড় ঝর্ণা  সবুজ অরণ্য মিলিয়ে এক অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ভুটান দেশটি। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা একইসঙ্গে ঠান্ডা ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশের কারণে অনেকের কাছে দেশটি আলাদা এক মাত্রা পেয়েছে। 
ভুটান
ভুটান
প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক অবসর সময় কাটানোর জন্য ভুটানে এসে থাকেন। আজকের আর্টিকেলে ভুটান যাওয়ার উপায় ও ভুটান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে যা ভুটান সম্পর্কে আপনাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে।

ভুটান যাওয়ার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে ভুটানে খুব সহজেই মাত্র দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করে যাওয়া যায়। যেমনঃ
  • সরাসরি বিমানের মাধ্যমে
  • বাই রোড বা সড়ক পথের মাধ্যমে
আমাদের বাংলাদেশের জন্য এই দুইটি পদ্ধতি ভুটান যাওয়ার জন্য খুবই কার্যকর। বাংলাদেশ থেকে বাই রোডের মাধ্যমে সড়ক পথে ভুটান যাওয়ার জন্য অনেক সুন্দর সুবিধা রয়েছে। কেননা আমাদের বাংলাদেশ থেকে ভুটানের দূরত্ব খুবই কম। 

যারা সড়ক পথে ভুটান যেতে চাচ্ছেন তাদের প্রথমে ভারত হয়ে এরপর ভুটান যেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে সড়কপথে ঢাকা থেকে ভুটান যেতে একদিনের মতো সময় লেগে থাকে। সড়ক পথে ভুটান যাওয়ার প্রধান সুবিধা হল ভ্রমণ খরচ খুবই কম লাগে।

ভুটান ভিসা প্রসেসিং করার উপায়?

বাংলাদেশ থেকে এখন ভুটান যাওয়ার অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন বাংলাদেশীদের ভুটান যাওয়ার আগে কোন ধরণের ভিসার প্রয়োজন হয় না। আপনারা যে করেই ভুটান যান না কেন ইমিগ্রেশনে অন এরাইভাল ভিসা নিতে পারবেন। 

ভুটানের ইমিগ্রেশনে আপনি আপনারা পাসপোর্ট দেখালে কোন ধরণের ঝামেলা ছাড়াই ভূটানে যেতে পারবেন। ভুটানের ইমিগ্রেশন থেকে সাধারণত সাত দিনের পারমিট দেওয়া হবে। এই অনুমতি দিয়ে আপনারা অনেক সহজেই ভুটানের রাজধানী থিম্বু ও পারো ঘুরতে পারবেন। 

তবে যদি কোন ব্যক্তি ভুটানের অন্যান্য জায়গা ভ্রমণ করতে চান বা সাত দিনের বেশি অবস্থান করতে চান তাহলে থিম্বু ইমিগ্রেশন অফিস থেকে আলাদা করে আপনাদেরকে পারমিট নিতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে ভুটান বিমান ভাড়া কত | ঢাকা টু ভুটান বিমান ভাড়া ২০২৪

বাংলাদেশ থেকে ভুটান যেতে বিমান ভাড়া কত লাগে বা বাংলাদেশ থেকে ভুটান ফ্লাইট খরচ কত এই বিষয়ে এখনও অনেকেরই অজানা। বাংলাদেশ থেকে ভুটান ডার্ক এয়ার এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে গেলে ২৬ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকার মত খরচ আসতে পারে। 

বর্তমান বাংলাদেশ থেকে ভুটান যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটি বিমান চলাচল করে।বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিমানের মাধ্যমে ভুটান গেলে এক ঘন্টা পনেরো মিনিট থেকে সর্বোচ্চ এক ঘন্টা চব্বিশ মিনিট সময় লাগে।

ভুটান অন এ্যারাইভাল ভিসার জন্য কি কি লাগবে?

ভুটান অন এরাইভাল ভিসার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লাগবে। আপনাদেরকে ইমিগ্রেসনে যাওয়ার আগে অবশ্যই এই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো ব্যবস্থা করে নিতে হবে। যেমনঃ
  • পাসপোর্টের ইনফরমেশন পৃষ্ঠার এক কপি ফটোকপি লাগবে।
  • ভুটানে প্রবেশের দিন থেকে কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদের পাসপোর্ট লাগবে।
  • হোটেল বুকিং এর কাগজপত্র লাগবে।
  • পূরণকৃত এন্ট্রি ফরম লাগবে।
  • ভুটান যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তির অবশ্যইপাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
অনেকেই আছেন এন্ট্রি পারমিট ফরম কোথায় পাবেন এই বিষয়ে চিন্তায় থাকেন। আপনারা এন্ট্রি ফরম বিমানে অথবা ইমিগ্রেশন এর থেকে খুব সহজেই নিয়ে নিতে পারবেন। তবে আবার ফর্মটি নেওয়ার পর অবশ্যই ফর্মে উল্লেখিত যে সকল তথ্য চাইবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে, আপনার আশেপাশে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে, তখন সে আপনাকে সাহায্য করবে।

বাই রোড ভ্রমণে ভারতের ট্রানজিট ভিসা?

ট্রানজিট ভিসা বলতে আমরা মূলত বুঝে থাকি কোন দেশের উপর দিয়ে বা কোন দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অন্য দেশে ভ্রমণ করার অনুমতি পত্র। বাই রোডে বাংলাদেশ থেকে ভুটান যেতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই ভারত হয়ে যেতে হবে। 

তাই বাই রোডে ভুটান যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হবে। আর এই ট্রানজিট ভিসার জন্য আপনাদেরকে ভারত ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। 

এক্ষেত্রে আবেদনকারীরা পনেরো থেকে ত্রিশ দিনের মধ্যেই মেয়াদী ট্রানজিট ভিসা পেয়ে থাকেন। ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাদের কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
  • বর্তমান ঠিকানার সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিল লাগবে।
  • ছয় মাস মেয়াদী একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে ও তার ফটোকপি লাগবে।
  • সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড তোলা দুই ইঞ্চি ছবি লাগবে।
  • পূর্বে কখনো ভারত ভ্রমণ করে থাকলে সেই ভিসার ফটোকপি লাগবে।
  • অনলাইনে পূরণকৃত ভারতের ভিসা ফরমের প্রিন্ট কপি লাগবে।
  • পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে অবশ্যই সেটা জমা দিতে হবে। যদি পুরাতন পাসপোর্ট হারিয়ে যায় তাহলে জিডি কপি জমা দিতে হবে।
এগুলো ছাড়াও আরও যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাদেরকে সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে খুব সহজেই আপনারা ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে জমা দিতে পারবেন।

ভুটান ভিসা খরচ কত | ভুটান যেতে কত টাকা লাগে

ভুটান যেতে বাংলাদেশি পর্যটকদের ১,০০০ হাজার টাকা থেকে ২,০০০ হাজার টাকার মতো খরচ আসতে পারে। অন্যান্য বিদেশি পর্যটকদের ভুটান ভ্রমণ করতে খরচের পরিমাণ ৩৫০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডলার হলেও বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সেটা অনেকটাই কম।

ভুটানের আইনসভার নাম কি?

আমরা অনেকেই আছি এখনও ভুটানের আইনসভার নাম জানি না। ভুটানের আইনসভার নাম হল পার্লামেন্ট অফ ভুটান। এই আইনসভার মাধ্যমে ভুটানের যাবতীয় আইন সংক্রান্ত কাজকর্ম মূলত পরিচালিত হয়ে থাকে।

ভুটানের মুদ্রার নাম কি। ভুটানের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

যারা ভুটান ভ্রমণ করতে চান তাদের মধ্যে অনেকেরই প্রশ্ন আছে যে, ভুটানের মুদ্রার নাম কি এবং ভুটানের এক টাকা সমান বাংলাদেশের কত টাকা। ভুটানের মুদ্রার নাম হল গুলট্রাম। বর্তমানে ভুটানের এক টাকা সমান বাংলাদেশি ১.৩২ টাকার কাছাকাছি। ভুটানের ১,০০০ হাজার টাকা সমান বাংলাদেশি ১৩২০ টাকা।

ভুটানের মুসলিম জনসংখ্যা কত?

ভুটান যাওয়ার আগে ভুটানে মুসলিম জনসংখ্যা কত এই বিষয়ে অবশ্যই কিছুটা হলেও ধারণা নিয়ে নিতে হবে। ভুটানে মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.১ শতাংশ থেকে ০.২ শতাংশ মুসলিম। তাহলে আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে ভুটানে মুসলিম জনসংখ্যা খুবই কম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url