গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা - গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক অন্যতম। ব্যাংকটি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে। গ্রামীণ ব্যাংকের এই সকল সুযোগ সুবিধা গুলোর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ কর্মসূচি রয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহকরা খুবই সহজেই চাইলে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
গ্রামীণ ব্যাংক
গ্রামীণ ব্যাংক
আজকের পোস্টে গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি,গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন ও গ্রামীণ ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন, ও গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি লোন কিভাবে নিবেন এই নিয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

গ্রামীন ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়?

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কয়েক ধরনের লোন সুবিধা দেওয়া হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহকরা চাইলে খুব সহজেই কিছু শর্তাদি অবলম্বন করে এই সকল লোন নিতে পারবেন। গ্রামীণ ব্যাংকের লোন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন, গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন, গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি লোন খুবই অসাধারণ। 

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অনেকে কৃষি লোন সুবিধা নিয়ে থাকেন। নিম্নে এই তিন ধরনের লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

গ্রামীণ ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন?

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের টেকনিক্যাল শিক্ষার খাত গুলোতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারিং ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কোর্সের মেয়াদ অনুসারে ৩৮ হাজার টাকা থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হয়ে থাকে। এই লোনকে আমরা অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন বা গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ হিসেবে জেনে থাকি।

গ্রামীণ ব্যাংক দেশের শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী সমাজ গড়ে তোলার জন্য স্টুডেন্ট লোন দিয়ে থাকেন। দেশের নিম্ন মধ্যবিত্ত মধ্যবিত্ত উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা চাইলেও এই লোন নেওয়ার মাধ্যমে তাদের পড়াশুনা সামনের দিকে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। নিম্নে গ্রামীণ ব্যাংক স্টুডেন্ট লোনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলোঃ
  • গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শিক্ষা ঋণ মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক বিষয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহ গ্রামীণ ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীরা এই লোন নিতে পারবেন।
  • এম এ, এমএস, এমবিএ দুই বছর মেয়াদী কোর্সের শিক্ষার্থীরা দুই বছর পড়াশোনা করার জন্য সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার টাকা, যারা স্নাতকে পড়াশুনা করে থাকেন তারা চার বছরে ৭৭ হাজার টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে চার বছরে ৭৫ হাজার টাকা, ও এমবিবিএস যারা করছেন সেসব শিক্ষার্থীরা এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
  • গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শুধু তারাই শিক্ষালোন নিতে পারবে যারা গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক। গ্রাহকের সদস্যপদ এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন এক বছরের হতে হবে।
  • গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে শিক্ষার্থীকে  অবশ্যই ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে।
  • কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে যদি ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ টিউশনি ফি মওকুফ করে থাকে তারা শুধুমাত্র এই লোন পাবেন।
  • শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে গেলে পরের মাস থেকে গ্রামীণ ব্যাংকে পাঁচ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শিক্ষা ঋণ নেওয়ার যোগ্য হয়ে থাকলে সরাসরি গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় চলে যেতে হবে এবং ঋণ কর্মকর্তার নিকট যোগাযোগ করে আবেদন করতে হবে।

গ্রামীণ ব্যাংক হোম লোন?

গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহকরা বাড়ি তৈরি করার জন্য হোম লোন সুবিধাটি নিতে পারেন। যারা নিজস্ব একটি বাড়ি তৈরি করতে চান বা ফ্লাট কিনতে চান তারা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বাড়ি ঋণ কর্মসূচি নিতে পারবেন। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে খুবই অল্প পরিমাণ সুদের হারে হোম লোন নেওয়া যাবে। 

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে হলে সরাসরি গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় চলে যেতে হবে এবং তারা আপনাকে কিছু শর্তাদি দিবে এগুলো পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ তারা প্রথমেই দেখবে আপনি লোন পাওয়ার জন্য যোগ্য কিনা।

লোন পাওয়ার জন্য যদি যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে একটি ঋণ ফ্রম দিবে সেটি পূরণ করতে হবে।লোন ফর্মটি পূরণ করার জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ড,নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, ব্যক্তিগত তথ্য সহ আরো অনেক কিছু দিতে হবে। 

লোন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে গ্রামীণ ব্যাংকের নিযুক্ত ঋণ কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। তারপরে কিছুদিন যাচাই-বাছাই করবে এবং যদি সবকিছু ঠিকঠাক থেকে থাকে তাহলে গ্রামীণ ব্যাংক আপনাকে হোম লোন প্রদান করবেন।

গ্রামীণ ব্যাংক কৃষি লোন?

বাংলাদেশ কৃষির্ভর একটি দেশ আমরা অনেকেই জানি। বাংলাদেশের যে সকল কৃষক কৃষি কাজ করে থাকেন তারা বেশিরভাগই অর্থনৈতিক দিক থেকে অসচ্ছল।তাই গ্রামীন ব্যাংক এই সকল কৃষকদের কথা চিন্তা করে কৃষি ঋণ প্রকল্প নিয়ে এসেছে। 

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কৃষকদের এই লোন সুবিধা নিতে হলে অবশ্যই নিজস্ব জমি থাকতে হবে। তাছাড়া কৃষি কাজের উপর যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে। কৃষকদের কৃষি কাজ করার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম লেগে থাকে তাই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কৃষি লোন নেওয়ার মাধ্যমে এই সকল সরঞ্জাম গুলো কেনা যাবে।

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কৃষি লোন সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য পাওয়া যায় এবং এখানে গ্রাহককে ৬ শতাংশ হারে ইন্টারেস্ট প্রদান করে লোন পরিশোধ করতে হয়।

গ্রামীণ ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট | গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যে সকল গ্রাহক লোন সুবিধা নিতে চান তাদের অনেকের প্রশ্ন থাকে গ্রামীণ ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট কত এই নিয়ে। গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক কম সুদে লোন দিয়ে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যারা কৃষি লোন সুবিধা নিয়ে থাকেন তাদেরকে ৬ শতাংশ হারে ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হয়। 

তাছাড়া গ্রামীন ব্যাংক থেকে হোম লোন ও স্টুডেন্ট লোন যারা নিয়ে থাকেন তাদেরও ৬ শতাংশ সুদের হারে লোন পরিশোধ করতে হয়। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে গ্রামীণ ব্যাংকে ইন্টারেস্ট রেট অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেকাংশে কম ও এখানে সুযোগ-সুবিধা অনেক ভালো।

গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ কি কি?

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কাজ হল গ্রামীণ দরিদ্রদের, বিশেষ করে মহিলাদের, কোন জামানত ছাড়াই ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা। এছাড়াও ব্যাংক তার সদস্যদের বিভিন্ন সঞ্চয় ও আমানত স্কিম, বীমা, শিক্ষা ঋণ, পশুসম্পদ ঋণ, শস্য ঋণ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণ ও অন্যান্য সেবা প্রদান করে।

গ্রামীণ ব্যাংকে ম্যানেজারের বেতন কত?

গ্রামীণ ব্যাংকে একজন ম্যানেজারের বেতন তার অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা ও কর্মচারী অবস্থান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। আমরা ইন্টারনেট রিসার্চ ও তাদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এর মাধ্যমে জানতে পারি একজন গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের বেতন ২৫ হাজার টাকার মতো হয়। 

অন্যান্য পদ, যেমন প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, বিশেষজ্ঞ বা প্রধান প্রকৌশলী, তাদের দায়িত্ব এবং যোগ্যতার উপর নির্ভর করে উচ্চ বা কম বেতন থাকতে পারে।

গ্রামীণ ব্যাংক কি এনজিও?

গ্রামীণ ব্যাংক একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) যা বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশের দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ এবং সম্প্রদায়ের উন্নয়ন পরিষেবা প্রদান করে থাকে।

গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান কে?

গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন ড. একেএম সাইফুল মজিদ।

গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার কত?

গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ঋণের জন্য বিভিন্ন সুদের হার নেয়। ক্রমবর্ধমান ব্যালেন্স এর ভিত্তিতে মৌলিক ঋণের সুদের হার বার্ষিক ২০%। হ্রাসকারী ব্যালেন্স এর ভিত্তিতে ক্ষুদ্র এন্টারপ্রাইজ লোনের সুদের হার বার্ষিক ভিক্তিতে ২৫%। শিক্ষা ঋণের একটি হ্রাসকারী ব্যালেন্স ভিত্তিতে বার্ষিক ৫% সুদের হার রয়েছে। 

পতনশীল ভারসাম্যের ভিত্তিতে পশুসম্পদ ঋণের সুদের হার বার্ষিক ৪%। ক্রমহ্রাসমান ব্যালেন্স এর ভিত্তিতে ফসল ঋণের সুদের হার বার্ষিক ৮%। ক্রমবর্ধমান ব্যালেন্স এর ভিত্তিতে সেতু ঋণের সুদের হার বার্ষিক ১২%।

গ্রামীণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা?

গ্রামীণ ব্যাংকের কিছু সুযোগ সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলঃ

মৌলিক বা Basic ঋণ কি?

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রাথমিক ঋণ হল মৌলিক বা (Basic)। যা নতুন এবং নতুন গ্রুপ সদস্যদের জন্য স্টার্টআপ মূলধন। ইহা ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে ৩০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যবসার ধরণ এবং ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে দেওয়া হয়।

বৃদ্ধিমূলক ব্যালেন্স ভিত্তিতে সুদের হার বার্ষিক ২০% হয়। এই ঋণটি এক বছর মেয়াদি এবং সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ দিতে হয়। মৌলিক বা বেসিক ঋণ কৃষি, হস্তশিল্প, পশুসম্পদ, বাণিজ্য কিংবা পরিষেবার মতো যেকোন আয়বর্ধক কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা হয়।

মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ কি?

যেসকল সদস্যরা খুব দ্রুত সফলভাবে তাদের ঋণ পরিশোধ করেছেন। তারা বিশেষ বিনিয়োগের জন্য বড় ঋণ নিতে পারেন, যাকে মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ বলে।

ব্যবসার আকার ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে এই ঋণগুলোর পরিসীমা ৩০,০০০ হাজর থেকে ৫০,০০০০ হাজর টাকা পর্যন্ত হয়। বৃদ্ধিমূলক ব্যালেন্স ভিত্তিতে সুদের হার বার্ষিক ২০%। ঋণটি ১ থেকে ৩ বছরের মধ্যে সাপ্তাহিক অথবা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। 

মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ঋণ বিদ্যমান ব্যবসায় সম্প্রসারণ বা বৈচিত্র্যকরণ অথবা একটি নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফসল ঋণ কি?

শস্য ঋণ খুব অল্পমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য প্রদান করা হয়। সাধারণত মৌসুমি চাষের জন্য এ ঋণ প্রদান করা হয়। ফসলের ধরণ ও স্কেলের উপর নির্ভর করে এই ঋণের সীমা ৫,০০০ হাজার টাকা থেকে ৫০,০০০ হজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বৃদ্ধিমূলক ব্যালেন্স ভিত্তিতে সুদের হার বার্ষিক ২০%।

ফসল কাটার পর সমস্ত টাকা একবারে পরিশোধ করতে হয়। শস্য ঋণে যেগুলো ঋণ দিয়ে থাকে যেমনঃ বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ বা ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পাট বা সবজি ইত্যাদি।

পশু সম্পদ ঋণ কি?

সদস্যরা গবাদি পশু ক্রয় ও মোটাতাজাকরণের জন্য গবাদি পশু ঋণ নিতে পারেন। গবাদি পশুর সংখ্যা এবং মানের উপর নির্ভর করে এই ঋণের পরিসীমা ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে ৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বৃদ্ধিমূলক ব্যালেন্স ভিত্তিতে সুদের হার বার্ষিক ২০%। ঋণটি এক বছর মেয়াদি, সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ দিতে হয়। 

গবাদি পশুর ঋণ যেমনঃ গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ অথবা অন্যান্য পশু কেনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে যেমনঃ দুধ উৎপাদন, মাংস উৎপাদন বা বিক্রয়ের জন্য।

সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট কি?

সদস্য ও অ-সদস্য উভয়েই গ্রামীণ ব্যাংকে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা জমা দিয়ে সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে বার্ষিক সুদের হার 8%। সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট থেকে যেকোন সময় কোন নোটিশ বা জরিমানা ছাড়াই টাকা তোলা যাবে।

উচ্চ শিক্ষা ঋণ কি?

১৯৯৭ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের সন্তানদের জন্য উচ্চ শিক্ষা ঋণ চালু করা হয়েছিল। যাতে তারা গ্রামীণ ব্যাংকের সহায়তায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। অধ্যয়নের স্তর এবং ক্ষেত্রের উপর নির্ভর করে এই ঋণের পরিসীমা ৫০,০০০ হাজার টাকা থেকে ৫,০০০০০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। বৃদ্ধিমূলক ব্যালেন্স ভিত্তিতে এ ঋণেে সুদের হার বার্ষিক ৫%।

কোর্স শেষ হওয়ার পরে বা চাকরি পাওয়ার পরে, যা প্রথমে আসে সেই ঋণ মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়। এই ঋণ বাংলাদেশে বা বিদেশের যেকোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, আইন, ব্যবসা, কলা অথবা বিজ্ঞানের মতো যেকোন বিষয়ে পড়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

সংগ্রামী সদস্য ঋণ কি?

ভিক্ষুক বা দরিদ্র ব্যক্তিদের কাছে ঋণ সুবিধার জন্য, গ্রামীণ ব্যাংক স্ট্রাগলিং মেম্বারস প্রোগ্রাম নামে একটি বিশেষ সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যা জুলাই ২০০২ থেকে শুরু হয়েছে।

এই কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। গ্রামীণ ব্যাংকে যোগদান করতে ইচ্ছুক ভিক্ষুক এবং অন্যান্য নিঃস্ব ব্যক্তিদের জন্য ৫০০ শত টাকা থেকে ২,০০০ হজার টাকা এবং কিছু আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড যেমনঃ স্ন্যাকস, খেলনা, ফুল বা গৃহস্থালী সামগ্রী বিক্রি করে তাদের জীবন উন্নত করার চেষ্টা করে।

ভিক্ষার সাথে সাথে ঋণ গ্রহীতার সুবিধা অনুযায়ী নমনীয় কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হয়। পরিশোধের জন্য কোন সময়সীমা বা জরিমানা নেই। সংগ্রামরত সদস্যদের প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২০ টাকা সঞ্চয় করতে উৎসাহিত করা হয়।

সেতু ঋণ কি?

সেতু ঋণ দেওয়া হয় সদস্যদের আমানতের ভিত্তিতে যারা তাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা জন্য ঋণের  আবেদন করেছেন কিন্তু এখনও পাননি। আমানতের পরিমাণ এবং ঋণগ্রহীতার প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে এই ঋণের পরিসীমা ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে ৫০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

গ্রামীণ ব্যাংকে টাকা জমা রাখার ভিত্তিতে সুদের হার বার্ষিক ৪%। ঋণটি এক বছর মেয়াদি, সাপ্তাহিক কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এই সেতু লোনের সুবিধা হল ভর্তি ফি, টিউশন ফি, হোস্টেল ফি অথবা উচ্চ শিক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য খরচ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা হয়। 

আমাদের শেষ কথা, গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি বা গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে ইতিমধ্যে সঠিক ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি গ্রামীণ ব্যাংক লোন পদ্ধতি নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন কিছু বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে। 

তাহলে নির্ভীঘ্নে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। মূল্যবান প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url