মেক্সিকো যাওয়ার উপায় - মেক্সিকো যেতে কত টাকা লাগে

মেক্সিকো আমেরিকা মহাদেশের একটি দেশ। মেক্সিকো দেশটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ একটি দেশ। তাছাড়া মেক্সিকো অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক শক্তিশালী হওয়ায় সারা বিশ্ব থেকে অনেকেই মেক্সিকোতে কাজের উদ্দেশ্যে এসে থাকেন। মেক্সিকোতে কাজের অনেক সুযোগ সুবিধা থাকার কারণে ও মেক্সিকোর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেক সুন্দর হওয়ার কারণে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবছর অসংখ্য লোক মেক্সিকোতে ভিসা নিয়ে এসে থাকেন।
মেক্সিকো
মেক্সিকো
তবে অনেকেই মেক্সিকো ভিসা পাওয়ার উপায় ও মেক্সিকো যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে জানেন না। আজকের পোস্টে এই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা তুলে ধরা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ

মেক্সিকো যাওয়ার উপায়?

মেক্সিকো যাওয়ার জন্য দুই ধরনের ভিসা ব্যবহার করা যেতে পারে। এই দুই ধরনের ভিসা ব্যবহার করে প্রতিবছর অসংখ্য লোক মেক্সিকোতে যাচ্ছেন। মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা। মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা নেওয়া অনেকটা সহজ হলেও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া অতটা সহজ না। 

নিম্নে মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা?

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মেক্সিকো যাওয়া অনেকটা অসম্ভব। কেননা বাংলাদেশে মেক্সিকোর কোন এম্বাসি নাই।তাই মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা সাধারণত ভারতে গিয়ে করতে হয়। তবে এখন বাংলাদেশে থেকেও মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশে অনেক সরকার প্রদত্ত এজেন্সি রয়েছে তারা সরাসরি মেক্সিকোতে যাওয়ার জন্য টুরিস্ট ভিসা দিয়ে থাকেন। 

এই সকল এজেন্সি গুলো ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করে মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশ থেকে যারা টুরিস্ট ভিসা মেক্সিকো যেতে চান তাদেরকে দিয়ে থাকে। তবে এদের মাধ্যমে ভিসা করতে হলে আপনাদের অবশ্যই প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবেঃ

মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা পেতে কি কি করা লাগে। মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা নিতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। যেমনঃ
  • মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য মেক্সিকো দূতাবাসে আবেদন করতে হবে।
  • মেক্সিকো ভিসা আবেদন ফরমটি সুন্দরভাবে পূরণ করতে হবে।
  • টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করার জন্য একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে ও পাসপোর্টে ছয় মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি লাগবে।
  • জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি লাগবে।
তাছাড়া মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আর কোনো ডকুমেন্ট লাগলে খুব সহজেই মেক্সিকো দূতাবাসের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী ভিসা আবেদন পত্র জমা দিতে পারবেন।

মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা?

মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খুব সহজেই বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত কিছু এজেন্সি রয়েছে এদের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। এই সকল এজেন্সি গুলো সরাসরি ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করে বাংলাদেশীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকেন। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গিয়ে মেক্সিকোতে খুব সহজেই কাজ পাওয়া যায়। 

মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অনেকে চাইলে সরাসরি ভারতে গিয়েও করে নিতে পারেন। তবে বাংলাদেশের মেক্সিকো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কোন দালালের মাধ্যমে যদি করা হয়ে থাকে তাহলে অনেক বেশি খরচ হয়ে থাকে।

মেক্সিকোতে বাঙালিরা কি কাজ করেন?

মেক্সিকোতে বাঙালিরা কি কাজ করে থাকেন অনেকের এই বিষয়ে জানার আগ্রহ রয়েছে।মেক্সিকো যেহেতু উন্নত একটি দেশ তাই সেখানে আইটি খাতে কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মেক্সিকোতে বাঙালিরা অনেকেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এই ধরনের কাজগুলো করে থাকেন। 

তাছাড়া মেক্সিকোতে অনেক বাঙালিরা রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে কাজ, কনস্ট্রাকশনের কাজ ও পাইপ ফিটার হিসাবে অনেকেই কর্মরত রয়েছেন।অনেকে মেক্সিকোতে ক্লিনার হিসেবেও কাজ করেন।

মেক্সিকোতে কাজের বেতন কত?

মেক্সিকেতে যারা কনস্ট্রাকশনের কাজে সহকর্মী হিসেবে কাজ করে থাকেন তারা প্রতি মাসে ৮০০ থেকে ৯০০ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন। মেক্সিকোতে যারা কনস্ট্রাকশনের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করে থাকেন তারা প্রতিমাসে ১০০০ থেকে ১২০০ ডলার বেতন পান। 

মেক্সিকোতে হোটেল কর্মী ও কনস্ট্রাকশন কর্মীরা প্রতিমাসে ৭০০ থেকে ৮০০ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন। মেক্সিকোতে সব থেকে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন যারা আইটি খাতে কাজ করে থাকেন। এই সকল কর্মীরা প্রতিমাসে ১৫০০ থেকে ২০০০ ডলারের উপরে আয় করে থাকেন।

মেক্সিকো যেতে কত টাকা লাগে?

মেক্সিকো যাওয়ার খরচ কত বা মেক্সিকো যাওয়ার জন্য বর্তমানে কত টাকা খরচ হচ্ছে এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। মেক্সিকো টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে হলে তিন থেকে চার লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। 

তাছাড়া যারা মেক্সিকোতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যান তাদের সবকিছু মিলিয়ে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে। তবে ভালো ভিসা নিয়ে মেক্সিকোতে যেতে হলে ১০ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

বাংলাদেশ টু মেক্সিকো বিমান ভাড়া?

বাংলাদেশ টু মেক্সিকো বিমান ভাড়া সম্পর্কে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। ঢাকা থেকে সরাসরি মেক্সিকো যাওয়ার কোন ফ্লাইট নেই। তবে কেউ চাইলে লোকাল ভাবে বিমানে করে মেক্সিকোতে যেতে পারবেন। 

ঢাকা থেকে মেক্সিকো যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে মেক্সিকো যাওয়ার সর্বনিম্ন বিমান ভাড়া এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা।

মেক্সিকো এম্বাসি বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে মেক্সিকোর কোন এম্বাসি নেই। বাংলাদেশ থেকে যারা মেক্সিকো ভিসা করে থাকেন তারা সরাসরি এজেন্সির সাহায্য নিয়ে ভারতের এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা ভিসা করে থাকেন।

শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে মেক্সিকো যাওয়ার উপায় ও মেক্সিকো যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url