প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

আপনি কি প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানেন। আমরা অনেকেই প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানিনা। আজকে আমরা উক্ত আর্টিকেলটির মাধ্যমে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে। আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আমরা জানি গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শারীরিক অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। গর্ভ অবস্থার সময়কাল ৯ মাস ৭ দিন। পুরো গর্ভকালীন সময়ে মেয়েরা একেক মাসে একেক ধরনের শারীরিক সমস্যা অনুভব করে থাকে। উক্ত আর্টিকেলটিতে আমরা প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

পোস্ট সূচিপত্র ঃ প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ 

যারা প্রথমবার মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছে তারা খুব সহজেই দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো বুঝতে পারবেন। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ৬-৭ সপ্তাহের মধ্যেই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।অনেকেই আবার এক সপ্তাহের মধ্যেও বুঝতে পারেন। চলুন এক নজরে দেখে নিই দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ।

  • গর্ভবতী হওয়ার প্রথম লক্ষণ হচ্ছে পিরিয়ড বন্ধ হওয়া। অনেক নারীদের নানান ধরনের সমস্যার কারণে পিরিয়ড অনেক সময় বন্ধ হয়ে থাকে। যদি মাস পেরিয়ে যাবার ১০ থেকে ১৫ দিন পিরিয়ড বন্ধ থাকে তাহলে সাধারণভাবেই ধারণা করা হয় হয়তো সে গর্ভধারণ করেছে।
  • বমি বমি ভাব হওয়া গর্ভধারণ করার আরেকটি লক্ষণ। এটি সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে হয়।সাধারণত গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে অর্থাৎ সকালের দিকে এই সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে। তবে শুধু সকালেই নয় দিনের যেকোনো সময় এই সমস্যাটি হতে পারে।
  • ক্লান্তি অনুভব করা গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। দেখা যায় বেশিরভাগ নারীরাই গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়। অল্প কাজেই অনেক ক্লান্তি অনুভব করে হাঁপিয়ে যায়।
  • গর্ভধারণের অন্যতম একটি লক্ষণ হচ্ছে কিছু কিছু খাবার বিস্বাদ লাগা। অর্থাৎ কিছু কিছু খাবারের প্রতি অনীহা চলে আসে। আবার অনেক সময় অনেক অপছন্দের খাবার ভালো লাগতে শুরু করে। খাবারের বিদঘুটে গন্ধ বা চারপাশের অন্যরকম একটা গন্ধ লাগে।
  • প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। গর্ভাবস্থার প্রথম ২ থেকে ৩ সপ্তাহে এই সমস্যাটা হওয়া স্বাভাবিক। পরবর্তীতে এর মাত্রা যদি ক্রমশ বেড়েই যায় তাহলে অবশ্যই ডায়াবেটিস টেস্ট করাতে হবে।

  • অত্যাধিক ক্ষুধা অনুভব হওয়া প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ২-৩ মাস বা অনেকের আবার শেষের মাসগুলোতে ক্ষুধা বেশি লাগতে পারে।
  • প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে স্তনে ব্যথা অনুভব করা। হরমোন এর নিঃসরণের কারণেই এই সমস্যাটি হয়ে থাকে।
  • প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ হচ্ছে অনেক বেশি ঘুম অনুভব করা। এই সময়ে নারীদের রাতে ঘুম থেকে উঠে বারবার প্রস্রাব করা, মাথাব্যথা হওয়া, শরীরে খুব বেশি ক্লান্তি অনুভব করা ইত্যাদি বিষয়গুলো হয়েই থাকে এবং এগুলো খুব স্বাভাবিক বিষয়।

গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ  

নতুন বিবাহিত মেয়েরা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ গুলো ফেস করে একটা নতুন কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতার শিকার হয় মেয়েরা। তাছাড়াও তারা অনেক কিছুই ধারণা করতে পারে না। এবারে আমরা জানবো গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ। 

  • গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ গুলোর মধ্যে প্রথম হচ্ছে পিরিয়ড বন্ধ হওয়া। মেয়েরা সাধারণত প্রথম মাসের ১০ থেকে ১৫ দিন পর যদি পিরিয়ড না হয় তাহলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করে থাকে যে সে গর্ভবতী। 
  • গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে খাবারে অনীহা। গর্ভাবস্থায় অনেক পছন্দের খাবার বিস্বাদ লাগা শুরু হয়। আবার নাকে খুব সুস্বাদু খাবারের গন্ধ তামাটে বা বিদঘুটে লাগে।
  • ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের লক্ষণ। গর্ভাবস্থার প্রথম দুই থেকে তিন সপ্তাহে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক। এরপর যদি এর মাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
  • ক্লান্তি অনুভব করা গর্ভবতী হওয়ার প্রথম মাসের একটি লক্ষণ। এই সময়ে গর্ভবতী নারীরা সাধারণত অল্প কাজেই অনেক ক্লান্তি অনুভব করে থাকে।
  • অত্যাধিক খুদা অনুভব হওয়া গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। এ সময় সাধারণত অনেকের প্রথম দুই থেকে তিন মাস এই সমস্যাটি হয়ে থাকে আবার অনেকের শেষের মাসগুলোতে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বাংলা  

আমরা অনেকেই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বাংলা সম্পর্কে জানি না। চলুন জেনে নেই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ বাংলা সম্পর্কে যেখানে একটি মহিলা নয় মাসের বিভিন্ন দশায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন

  • পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া

গর্ভবতী হওয়ার প্রথম লক্ষণ হচ্ছে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া। এ সময়ে নারীরা নিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার তারিখ হতে ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ওয়েট করার পর পিরিয়ড না হলে স্বাভাবিকভাবে ধারণা করে থাকে সে গর্ভবতী। কিন্তু এই পিরিয়ড শুধু গর্ভাবস্থার কারণেই নয় অন্য কারণে বন্ধ থাকতে পারে। তাই ফাইনালি জানতে টেস্ট করাতে হবে।

  • শারীরিক ক্লান্তি

গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে শারীরিক ক্লান্তি অনুভব করা। এই সময়ে মেয়েরা অল্প কাজ করতেই অনেক ক্লান্তি অনুভব করে।

  • বমি বমি ভাব

গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে বমি বমি ভাব হওয়া। এই সময়ে মেয়েদের পছন্দের খাবার সামনে দেওয়া হলে বমি চলে আসে। এছাড়াও অনেক সুস্বাদু খাবারেরও দুর্গন্ধ অনুভব করে। 

  • স্তন-যুগলে পরিবর্তন

স্তন-যুগলে পরিবর্তন হওয়া, স্তন ফুলে যাওয়া বা ভারি হওয়া, স্তনে হালকা ব্যথা অনুভব করা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ। গর্ভধারণের প্রায় ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই নারীরা স্তনে ব্যথা অনুভব করে।

আরো পড়ুন গর্ভাবস্থায়নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা - নাশপাতি খেলে কি হয়

  • বারবার প্রস্রাব হওয়া

বারবার প্রস্রাব হওয়া গর্ভবতী হওয়ার আরেকটি কমন লক্ষণ। গর্ভাবস্থায় শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায় যার জন্য কিডনী অধিক পরিমাণে তরল মিশ্রিত করতে শুরু করে, যা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

  • মনের পরিবর্তন

এ সময় মনের পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। এই সময়ে মেয়েদের সাধারণত হঠাৎ করে কান্না পায় আবার বিনা কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় আবার হঠাৎ করে আনন্দিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে।

  • কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভধারণের লক্ষণ এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। পিরিয়ড মিসের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে গর্ভধারণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ 

আমরা অনেকেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি জানিনা। তাই এবারে জেনে নিব অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার লক্ষণ গুলোর মধ্যে প্রথমেই যেটি হয় সেটি হচ্ছে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। নির্দিষ্ট সময় পিরিয়ড না হলে মেয়েরা প্রথমেই ধারণা করে থাকে যে সে অন্তঃসত্তা।

অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে অত্যাধিক ক্লান্তি অনুভব করা। এই সময় মেয়েরা অল্প কাজেই অনেক ক্লান্তি অনুভব করে। 

অন্তঃসত্ত্ব হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার নির্দিষ্ট দিনের আগে হালকা রক্তক্ষরণ অথবা পেটে টান ধরা। ভ্রুণ সঞ্চার হওয়ার প্রথম ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এমন হতে পারে।

আরো পড়ুন হরমোনের সমস্যাবোঝার উপায়

স্তনে পরিবর্তন হওয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার আরেকটি লক্ষণ। গর্ভে ভ্রুণ সঞ্চার হলে শরীরে ঘটে নানা ধরনের পরিবর্তন। দেখা যায় স্তন ভারি হয়ে যায় এবং স্তনে ব্যথা অনুভব করে।

বমি বমি ভাব হওয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার আরেকটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। এই সময় মেয়েদের খাবার প্রতি অরুচি চলে আসে। অনেক পছন্দের খাবার হলেও তার বমি চলে আসে। আবার এই সময়ে হালকা গন্ধ খুব জোরালো গন্ধের মত মনে হয়।

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া অন্তঃসত্তা হওয়ার লক্ষণ। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সমস্যাটি হওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়।

সাদা স্রাব কি প্রেগনেন্সির লক্ষণ 

আমাদের অনেকের প্রশ্ন সাদা স্রাব কি প্রেগনেন্সির লক্ষণ? চলুন এই সম্পর্কে জেনে নিই। গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাব নির্গত হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। বরং অন্য সময়ের তুলনায় এই সময় সাদা স্রাব তুলনামূলকভাবে বেশি নির্গত হয়ে থাকে। কারণ গর্ভাবস্থায় এস্ট্রোজেন হরমোন বেড়ে যায় এবং যোনির আশেপাশে এ সময় রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। গর্ভাবস্থায় সাধারণত জরায়ুর মুখ এবং যোনির দেয়াল নরম হয়ে যায়। সেই কারণে গর্ভাবস্থায় স্রাব নির্গত হওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়।

৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ 

চলুন জেনে নিই ৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ গুলো কি কি। প্রথম মাস গুলোর তুলনায় এই মাসগুলোতে বমি বমি কম হতে পারে বা কম হয়। এই সময়টিতে আস্তে আস্তে ক্লান্তি কমে গিয়ে শরীরে এবং মনে বেশি জোর আসে। অর্থাৎ প্রথম এবং দ্বিতীয় মাসের তুলনায় পরবর্তী মাসগুলোতে পূর্বের থেকে একটু ভালো অনুভব করা যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় শরীরে কোন জটিলতা দেখা দিলে সাথে সাথেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আমাদের আজকের এই প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ উক্ত আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটিতে প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। এই ধরনের আরোও আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। তাহলে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ২৩২৬১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url